বিনোদন প্রতিবেদক : ‘চলচ্চিত্রে আমার কোনো গডফাদার নেই’- এ কথা বলেছেন উঠতি নায়িকা আরশি হোসেন। ‘সবুজ ছায়া’, ‘বাংলার দর্পণ’, ‘পুষ্প আলো’ এবং মুক্তি প্রতিক্ষীত ‘রোহিঙ্গা’ ছবি নিয়েই নায়িকা আরশি হোসেনের বর্তমান জগত। ‘রোহিঙ্গা’ ছবিটি নির্মাণ করেছেন ইস্যুভিত্তিক চলচ্চিত্রের নির্মাতা অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড। যাহোক, চলচ্চিত্রের বিদ্যমান খরায় যারা নিজেদের ক্যারিয়ার পল্লবিত করার চেষ্টায় নিয়োজিত এই নায়িকা তাদের একজন এবং অনেকের চাইতে অগ্রগামীও তিনি। ‘সত্যিকারের মানুষ’ এবং ‘বাজে ছেলে: দি লোফার’ ছবি দুটি তাকে পাদপ্রদীপের আলোয় আনতে না পারলেও রোহিঙ্গাকে কেন্দ্র করে তিনি এখন রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা ছবিটি সম্পাদনার সময় কিছু অংশ দেখেছি। আরশির পারম্যান্স দেখে আমি নিজেই তাকে নিয়ে ছবি বানাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছি। তাকে নিয়ে একটি ছবি বানাবো আমি।’ এই নিয়ে আরশির মধ্যে কোনো অহমিকা নেই। তিনি শুধু বলেছেন, ‘আমি ধীরে-সুস্থে এগিয়ে যাচ্ছি। ক্যারিয়ারকে দূর্বল করে গড়ে তুলতে চাই না।’ তিনি ক্যারিয়ারকে বিকশিত করতে চান গাছের ডালে ফুল আসার মতো স্বাভাবিক নিয়মে। রোহিঙ্গা ছবিতে আরশি রাষ্ট্রহীন শান্তি সন্ধানী রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্বশীল একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

আর ছবি করেন বা না করেন – জয়গুন, নবীতুন এবং গোলাপীদের মতো ঢাকার চলচ্চিত্রে আরশির রোহিঙ্গা চরিত্রটিও সব সময়ের হয়ে থাকবে। এই ক্যারিয়ার যোদ্ধা সাম্প্রতিক সময়ে কিছু লব্ধ অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, ‘চলচ্চিত্রে অনেকেই আসেন, যাদের পেছনে বাবা-ভাই-খালু রয়েছে। তাদেরকে সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠা পেতে তেমন একটা বেগ পেতে হয় না। কারো কারো আবার বয়ফ্রেন্ডও আছে। কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে এসব নতুনরা দু’একটি ছবি করার পরই দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। আমি বা আমার মতো যারা আছেন, তারা হারিয়ে যেতে আসেননি। আমার পেছনে এমন কোনো বিনিয়োগকারী নেই। কেউ আমাকে নেপথ্য থেকে সহায়তাও করছেন না। যেটুকু এগিয়েছি সেটুকু একেবারেই নিজের চেষ্টায়। আমরা যারা কোনো গডফাদার ছাড়া প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ব্যাপৃত তাদেরকে হেরে যেতে হবে না। আমরা টিকে থাকব। কারণ আমরা যোদ্ধা, ক্যারিয়ার যোদ্ধা।’

তিনি বলেন, ‘এখনকার পরিচালকরা অর্থবিত্ত দেখেই ছবিতে কাস্ট করেন। কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় কাজের প্রতি তাদের কোনো মনোযোগ নেই। তাদের ব্যস্ততা অন্যদিকে। কিন্তু আমরা যারা শতভাগ বিশ্বস্ততা ও সততা নিয়ে কাজ করতে এসেছি, তাদের দিকে বেশির ভাগ নির্মাতাই ফিরেও তাকান না।’

আরশি বলেন, ‘এছাড়া বেশির ভাগ নির্মাতাই তারকাদের নিয়ে ছবি বানাতে চান। সবাই যদি তারকা নিয়ে ছবি বানাতে চান তাহলে আমরা যারা ক্যারিয়ার যোদ্ধা আছি, তারা যাব কোথায়? একজন দক্ষ নির্মাতা কখনো তারকার জন্য অপেক্ষা করেন না। তারা ভালোভাবেই উপলব্ধি করেন যে, এখন যারা তারকা, তারাওতো এক সময় আমাদের মতোই নতুন ছিল। নতুন থেকেই তো তারকা তৈরি হয়। একজন শিল্পী যখন ডিপ্রেশনে ভোগে, তখন বুঝতে হবে এজন্য অন্যান্যের মধ্যে নির্মাতারাও কম দায়ি নয়।’

(এম/এসপি/মে ০৪, ২০২১)