নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী সুবর্ণচরে লম্পট ও হত্যা মামলার আসামি দেবরের কুপ্রস্তাব রাজি না হলে একাধিকবার ধর্ষণ চেষ্টা, মারধর ও বাসার কাজের মেয়েকে চিন্তাই করে ঐ গৃহবধূকে ফাঁসিয়ে দেয়া সহ প্রতিনিয়ত অকত্যভাষায় গালমন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে ৭ নং পূর্বচরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চরবাটা গ্রামের কাজির দোকান সংলগ্ন ছিদ্দিক হাফেজ বাড়ীর বেলায়েত হোসেন মাষ্টারের ছেলে ইকবাল হোসেন শাকিব (২২) এর বিরুদ্ধে।অতিষ্ঠ হয়ে গৃহবধূ পারুল বেগম চরজব্বার থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেন জিডি নং- ১২৮১ তারিখ ২৮ জানুয়ারী ২০২১।

পারুল বলেন, জিডি করার পর অত্যাচার আরো বেড়ে যায় বলে দাবী করেন গৃহবধূ পারুল বেগম, স্বামী কুয়েত প্রবাসী হওয়ায় এবং বাড়ীতে একা থাকায় প্রায় সময় রান্না ঘরে, বাড়ীর বাগানসহ কখনো কখনো গৃহবধূর ব্যক্তিগত রুমেও চলে আসতো ইকবাল হোসেন শাকিব প্রতিবাদ করলে ছেলের নামে বদনামী করছে বলে ঐ গৃহবধূকে মারধর চেষ্টা করেন সাকিবের পিতা বেলায়েত হোসেন ও। এই ভাবে দির্ঘ ২ বছর ধরে চলছে এমন অমানুষিক নির্যাতন। গত ১ মে গৃহবধূর শিশু সন্তান খড়ের পারা খেলা করাকে কেন্দ্র শাকিব এবং তার ভাই রাকিব গৃহবধূ পারুলকে মারধরের চেষ্টা করে এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এসয় বেলায়েত হোসেন মাষ্টারও ঐ গৃহবধূকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

শাকিব স্থানীয় একটি স্কুল ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে পেলেছে সে হত্যা মামলার আসামি হয়ে জামিনে বের হয়ে এসে তার সাহস আরো বেড়ে গেছে, সে সবার সামনে বুক ফুলিয়ে বলে, হত্যা করেছি কিছুই হয়নি তোকেও যে কোন সময় দুনিয়া থেকে উঠিয়ে দেয়া কোন ব্যপার নয়, ১ টা খুন করলেও যা ১০ টা করলে ও তা" এসব কথা বলে সব সময় আমাকে হুমকি দিতে থাকে, নানা রকম শারীরিক ইঙ্গিত ও অরুচিপূর্ণ আচোরনে আমি অতিষ্ঠ হয়ে গেছি, আমি একজন সামাজিক পবিবারের মেয়ে লজ্জায় কাউকে এসব কথা বলতেও পারিনা, আমার বাবাকে সমাজে সবাই চেনে সম্মান করে তাই সম্মানের ভয়ে কিছু করতে পারছিনা, আমি এসব অমানুষিক নির্যাতনের বিচার চাই।

নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী একই গ্রামের মোশাররফ হোসেন এর পুত্র মিজানুর রহমান (৩৫) বর্তমানে কুয়েত প্রবাসী। প্রবাস থেকে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমার দুইটি সন্তান আছে যে কোন সময় রাকিব, শাকিব আমার বাচ্ছাদেরকে সড়ক দূর্ঘটনা কিংবা পানিতে পেলে মেরে পেলতে পারে, তারা অত্যান্ত খারাপ আমার চাচাতো ভাই হলেও মূলত তারা অত্যান্ত জগণ্য প্রকৃতির মানুষ, প্রতিদিন আমার স্ত্রীকে জ্বালান করে আমার চাচা বেলায়েত মাষ্টারের ছেলে শাকিব ও রাকিব। সমাজে আমাকে সবাই চেনে লজ্জায় বলতে পারিনা, আমার স্ত্রী বেলায়েত মাস্টারের কাছো বিচার দিলে উল্টো তিনিও আমার স্ত্রীকে হুমকি ধমকিও মারধরের চেষ্টা করেন। ইদানিং তারা আমার স্ত্রীকে বাড়ী থেকে বের করে দেবার হমকি দিচ্ছে। আমি এসব অত্যায় অত্যাচারের সুবিচার চাই।

প্রতিবেশী হাজেরা বেগম বলেন, প্রায় সময় শাকিব এবং রাকিব পারুলকে অত্যাচার করে আসছে, কয়েকদিন মারধরও করেছে, শাকিব আমাদের এলাকার এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করার মামলার আসামি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এবং শাকিবের পিতা বেলায়েত হোসেনকে ফোন দিলে তিনি মুঠো ফোনে বলেন, সকল বিষয়ে অস্বিকার করেন। কথাকাটাকাটি হয়েছে, এসব নিয়ে থানায়, মামলা মোকাদ্দমার কি আছে, আমাদের বিরুদ্ধে এসব ভূয়া এবং মিথ্যা অভিযোগ, প্রয়োজনে আপনারা ঘটনাস্থলে এসে শুনে যান। শাকিবের হত্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলাটি চলমান, হাজিরা চলছে, তবে আমার ছেলে হত্যা করেনি।

এ বিষয়ে চরজব্বার থানার এস আই সালেহ উদ্দিন বলেন, পারুলের জিডি পেয়ে আমরা কোর্টে প্রেরণ করেছি, পরে কি হয়েছে জানিনা, নতুন কোন ঘটনা ঘটে থাকলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে পূর্বচরবাটা ইউনিয়নের পূবচরবাটা স্কুল এন্ড কলেজের মেধাবী ছাত্র মোঃ রিয়াজ উদ্দিন (১৪)। নানাদিয়া নামক স্কুল ছাত্রীর সাথে প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলমগীর এবং শাকিব, রাব্বিসক অজ্ঞাত কয়েকজন রিয়াজকে মারধর করে পরে সে বিষপান করে আত্মহত্যা করে তবে এটা আত্মহত্যা নয়, তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন নিহত ছাত্রের পরিবার প্রতক্ষ্যদর্শী সহপাঠিরা। নিহত রিয়াজ উদ্দিন ৭নং পূর্বচরবাটা ইউনিয়নের চর নাঙ্গুগুলিয়া গ্রামের চাকুরীজিবী আবুল কাশেমের ছেলে।

এ ঘটনায় রিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে পরদিন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন পূর্বচরবাটা গ্রামের বোরহান উদ্দিন ব্যাপারির ছেলে আলা উদ্দিন (১৮), বেলায়েত হোসেন মাষ্টারের ছেলে ইকবাল হোসেন শাকিবসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকেআসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার আসামি বেলায়েত হোসেনের পুত্র শাকিব।

(এস/এসপি/মে ০৫, ২০২১)