খালেদা জিয়ার আবেদন হাতে আসলে মতামত দেব : আইনমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদনের ফাইল মন্ত্রণালয়ে এসেছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আবেদন আমার হাতে আসলে সেই বিষয়ে মতামত দেব।’
বৃহস্পতিবার (৬ মে) এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ফাইলটি এখনও আমার কাছে পৌঁছায়নি। আমার সচিবের কাছে গতকাল (বুধবার) রাত ১১টায় পৌঁছেছে। যথারীতি যে ফর্মালিটিজগুলো করতে হয় সেগুলো করে আমার কাছে আসবে। আবেদনটি আসলে পরে আমি আমাদের মতামত দেব।’
মতামত আজকের মধ্যে দেয়া সম্ভব হবে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা কি আমার পক্ষে বলা সম্ভব।’
এর আগে বুধবার (৫ মে) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে লিখিত আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আবেদনটি পর্যালোচনার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এসব ব্যাপারে অত্যন্ত উদার। আমরা পজিটিভলি এই ব্যাপার দেখব। কালকের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এদিকে বিএনপির সূত্র জানায়, সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া ১১ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এরপর গত ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ৩ মে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে ৭ বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
এরপর গত বছরের মার্চে দেশে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেয়। প্রথম দফা মুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে গত বছরের ২৫ আগস্ট বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্থায়ী মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দ্বিতীয় দফায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায়। সবশেষ গত ২৫ মার্চ থেকে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়।
(ওএস/এসপি/মে ০৬, ২০২১)