স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় কৃষিকাজের জন্য সরকারি জমি ইজারা নিয়ে বিপণিবিতান নির্মাণ করছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী ও তাঁর সহযোগীরা। আইন অমান্য করে খাল ভরাট ও নির্মাণকাজ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

শহিদুল ইসলাম সাওরাইল ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর দুই সহযোগী হলেন রেজওয়ানুল রিপন ও আক্তারুজ্জামান। রেজওয়ানুল রিপনের বাড়ি উত্তর নগরবাথান গ্রামে। আক্তারুজ্জামান ঘাটরা গ্রামের বাসিন্দা। আক্তারুজ্জামান ইউপি সদস্য ও রেজওয়ানুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। দুজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রাজবাড়ী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৭ জুন ৩ জন আলাদাভাবে তিন বছর মেয়াদে ১ একর ৫২ দশমিক ৬৬ শতাংশ জমি ইজারা নেন। এর মধ্যে শহিদুল ইসলামের নামে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ, রেজওয়ানুলের নামে ৭৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং আক্তারুজ্জামানের নামে ৬৯ দশমিক ০৪ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী কৃষিকাজ বা হাঁস-মুরগি পালন ছাড়া ওই জমি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ভরাট করা যাবে না এবং ভবন বা কোনো ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা যাবে না। চুক্তি অমান্য করা হলে আপনাআপনি চুক্তিটি বাতিল বলে গণ্য হবে। জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ভিন্ন নামে হলেও পুরো জমিই চেয়ারম্যানের দখলে। অন্যরা তাঁর সহযোগী। ওই জমিতে বড় খাল ছিল। ইজারা নিয়ে প্রথম বছর মাছ চাষ করা হয়েছিল। এরপর চেয়ারম্যান খাল ভরাটের পর মার্কেট তৈরি করেছেন। আর পাশের খালটি কয়েক মাস আগে ভরাটের কাজ শুরু হয়।

বিষয়টি সম্পর্কে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ইজারা নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে। জমিতে কিছু দোকান তুলেছি। অফিসও করেছি। আমার প্রতিপক্ষের কিছু লোক বিষয়টি নিয়ে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।’

ইজারা দেওয়া জমি দেখভালের দায়িত্বে থাকা রাজবাড়ী পাউবোর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, 'লোকবল কম হওয়ায় ইজারা দেওয়া জমি সব সময় খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না। সাওরাইলে ইজারাদারেরা শর্ত ভঙ্গ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হবে।'

(একে/এসপি/মে ০৬, ২০২১)