গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : গলাচিপায় ‘কিশোর গ্যাং’দের দৈড়ত্ব বেড়েই চলেছে। এসকল কিশোর গ্যাংদের সদস্যরা মারামারিসহ বিভিন্ন ধরণের অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এর প্রভাবে সাধারণ ছেলে মেয়েরা এবং তাদের পরিবারের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে গলাচিপা পৌরসভায় কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা গত দুই দিনে তিনটি হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানাগেছে। এর মধ্যে কিশোর গ্যাং এর হামলায় গুরুত্বর আহত মো. তাইমুন ইসলাম অর্পন (১৬), মো. হুজাইফা আলিফ দিগন্ত (১৭) ও মো.ফারদিন ইসলাম অনু (১৮) ৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এ ঘটনায় গলাচিপা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোসা. রুজিনা আক্তার বাদি হয়ে গলাচিপা থানায় কিশোর গ্যাং এর সদস্য মো. সিয়াম প্যাদা, মো. জিপু ও মো. শাওনকে প্রধান আসামী করে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ১০-১২ জন অজ্ঞাত কিশোরের নামে একটি মামলা দাখিল করেন। গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার হচ্ছে বলে জানান।

মোসা. রুজিনা আক্তারের মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৌর এলাকার ৭নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দ পাড়ার মোড়ে অজ্ঞাত ৪-৫জন কিশোর মো.জিপু ও মো. শাওন প্যাদাকে মারধর করে। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যায় মো. তাইমুন ইসলাম অর্পন (১৬) ও মো.হুজাইফা আলিফ দিগন্ত (১৭) পৌরসভার আরামবাগ এলাকার স্থানীয় হেলিপ্যাড এলাকায় ঘুরতে যায়। এসম অর্পন ও দিগন্তকে সিয়াম, জিপু ও শাওনের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা মিলে বেধরক মারধর ও দেশী অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে আহত করে।

পরে বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আহত অর্পন ও দিগন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে মো.সিয়াম এর নেতৃত্বে ২৫-৩০জন কিশোর হাসপাতালে হামলা করে হামলা চালায়। এতে মো.ফারদিন ইসলাম অনু (১৮), মো.তরিকুল ইসলাম ইসলাম মিরাজ (২০), মো. ইমনসহ (১৮) ৮জন আহত হয়। এসময় হাসপাতালের গেট ও জরুরী বিভাগের দরজা ভাংচুরের জন্য হামলা করা হয়। এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফ আহমেদ আসিফ বলেন, ‘স্কুল লেভেলের ছেলেরা নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয় আহত দিগন্তের বাবার সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় অতি উৎসাহী অপর আরেকটি কিশোর গ্যাং হামলায় ইন্দন জোগায়।’ গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দিগন্ত ও অর্পন নামের দুই কিশোরের চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে কিছু কিশোর হাসপাতালের ভিতর ঢুকে উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। তারা চিকিৎসারত দিগন্ত ও অর্পনের চিকিৎসায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশে খবর দিলে তারা পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনেন।’

এ প্রসঙ্গে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’ তিনি কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে আরো বলেন, ‘ইদানিং হঠাৎ করেই গলাচিপা কিশোর গ্যাংদের তৎপরাতা দেখা যাচ্ছে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই সব নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

(এসডি/এসপি/মে ০৬, ২০২১)