গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর গলাচিপায় “আশ্রায়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার”-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে উপজেলায় আশ্রায়ন-২ প্রকল্পে অধীনে ২য় পর্যায়ে পাঁচশতটি ঘর নির্মান হচ্ছে। ঘর পেয়ে ঘরে ঘরে আনন্দ যেন থামছে না হত দরিদ্র মানুষদের। 

এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়নের হত দরিদ্র নুরজাহান বেগম (৬৫) বলেন, আমি শাক-সবজি বিক্রি করে জীবন-যাপন করি। হঠাৎ আমারে এক সাইবে কয় প্রধানমন্ত্রী গরীবগো ঘর দেয়। আপনে দরখাস্ত করেন আপনিও ঘর পাবেন। আমি উপজেলা অফিসের সামনে থেকে সিড়ি দিয়া উপরে উঠি। হ্যাইয়ানে একজন সাব আমাকে দরখাস্ত করতে ৩০ টাহা দেয়। হেই টাহা দিয়া দরখাস্ত কইরাই আমি জায়গাসহ এ্যাকটা ঘর পাইছি বলে তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। অন্যের ঘরে আমার জন্ম। আমার সন্তানের জন্মও অন্যের ঘরে। দীর্ঘ ৫০ বছর পর আমার নামে জমি ও ঘর পাব। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি তিনি যেন ভাল থাকেন, সুস্থ থাকেন।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও অফিসের ওই সাব (মো. মিরাজুল ইসলাম মিরাজ) মানুষ না তিনি একজন ফেরেশতা। আল্ল্যায় তারে যেন অনেক বড় করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা অফিসের নাজির মো. মিরাজুল ইসলাম

মিরাজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নুরজাহান বেগম নামের এক বৃদ্ধ মহিলা হঠাৎ করে আমার অফিসে ঢুকে বলে বাবা আমাকে একটা ঘর দেন। আমি তাকে দরখাস্ত করতে বললে তিনি বলেন, তার কাছে কোন টাকা নাই। তখন আমি তাকে ৩০ টাকা দরখাস্ত করার জন্য দিলে তিনি সেই টাকা দিয়ে দরখাস্ত করেন। তিনি ঘর পাওয়ায় আমিও আনন্দিত। একজন অসহায়, দরিদ্র গরিব মানুষ ঘর পেয়েছে এতেই আমি খুশি।

চিকনিকান্দী ইউনিয়নের সূচিত্রা রানী দাস বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাওয়ায় আমি অনেক খুশি হইছি। আগে আমার জায়গা ও ঘর ছিল না। মানুষের বাড়িতে থাকতাম। এখন আমার ঘরও হইছে জমিও হইছে।

গোলখালী ইউনিয়নের জয়দেব সাধু বলেন, ৪০ বছর যাবৎ মানুষ জায়গায় থাকতে হইছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঘর ও জায়গা দেওয়ায় আমি আনন্দিত। তাকে যেন ভগবান ভাল রাখেন, সুস্থ রাখেন। কলাগাছিয়া ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী হত দরিদ্র নারী নিপা রানী বলেন, অন্য মানুষের ঘরে থেকে থেকে অনেক বছর কাটালাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘর পেয়ে আমি অনেক খুশি হইছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস এম দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ১ম ধাপে গলাচিপা উপজেলায় ৩৯৩টি ঘর দেয়া শেষের পথে। ২য় পর্যায়ে ৫০০ টি ঘরের কাজ চলমান আছে।

আশ্রায়নের নির্মানাধীন ঘর পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার বলেন, গলাচিপা উপজেলায় আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে ২য় পর্যায়ে ৫০০টি ঘর নির্মান হচ্ছে। রতনদী তালতলী ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে নির্মানাধীন ঘরগুলো সঠিকভাবে যাতে উত্তোলন করা হয় সেজন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন, রতনদী তালতলী ইউনিয়নের তহশিলদার মো. মিলন মিয়া, চিকনিকান্দী ইউনিয়নের তহশিলদার মো. গোলাম মস্তফা, রতনদী তালতলী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা খান, ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

(এসডি/এসপি/মে ০৬, ২০২১)