জসিম উদ্দিন জুয়েল, টঙ্গী (গাজীপুর) : মনোরঞ্জন রায়ের মেয়ে ১৩ বছরের কন্যা সন্তানের মা স্বপ্না বেগমের প্রথম সংসার ভেঙে গেলে সে ধর্মান্তারিত হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে। সেই ঘরে ৩ বছরের ফুটফুটে সন্তান রেখে দ্বিতীয় সংসারটিও ভেঙে যায়। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৪৮নং ওয়ার্ড টঙ্গীর দত্তপাড়া ওসমান গনি রোডে একটি ভাড়া বাসায় দুই সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা স্বপ্না মানুষের বাসায় কাজ করে ও রান্না করা খাবার বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছিলো। গত রবিবার ভোর ৬ টায় একই এলাকার সাইকেল রিক্সা মেরামতকারী প্রায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ ছইজুদ্দিন স্বপ্না বেগম (৩০) কে দওপাড়া বনমালা রোড হাউজবিল্ডিং প্রধান সড়কে ছুরিকাঘাত করলে প্রচুর রক্তক্ষরণে হাসপাতালে নিতেই তার মৃত্যু হয়। সোমবার বাদ আছর ময়না তদন্ত পরবর্তী তাকে জানাযা শেষে মরকুন কবরাস্থানে কবরস্থ করা হয়।

অনুসন্ধানে জানাযায়, প্রায় ২৫ বছর পূর্বে দত্তপাড়া হোল্ডিং নং-২, মইজ উদ্দিন রোডের হাজী মোঃ হযরত আলি খানের বাসায় ভাড়া থেকে পলাতক ঝালকাঠির তিন সন্তানের জনক ছইজুদ্দিন তার এক ছেলে ও এক মেয়েকে বিয়ে দেয়। ছেলে মালেশীয়া প্রবাসী এবং এক মেয়ে দত্তপাড়াতেই ভাড়া থাকে। ছোটো মেয়ে থাকে ঝালকাঠিতে।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের প্রতিনিধি গত সোমবার রাত প্রায় ৭.৩০ মিনিটে বাড়িওলা হাজী হযরত আলির ছেলেকে ছইজুদ্দিনের ছোটো মেয়ের সাথে মুঠফোনে কথা বলতেও দেখে।

বাড়িওলা হাজীর ছেলে মোঃ শহিদুল (৪৫) ছইজুদ্দিনের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ড এবং দোকানের দলিল পত্র কিছুই দেখাতে পারেনি। শহিদুল জানায়, প্রায় ২৫ বছর পূর্বে ভাড়া এসেছিলো পলাতক ছইজুদ্দিন। প্রায় ৫ বছর পুর্বে স্ত্রী মারা গেলে সে বাসা ছেড়ে দেয় এবং মিরপুর নিবাসী শহিদুলেরই বড় বোন মায়ার দোকানটি ছইজুদ্দিনকে ভাড়া দেয় তারা। পলাতক ছইজুদ্দিন সেই দোকানেই থাকতো। অনাথ শিশু মেয়ে দুটি তাদের মায়ের মৃত্যুতে বিপর্যস্ত ও বাকরুদ্ধ। এলাকাবাসী এর কঠোর বিচার চায়। এলাকার কিছু মানুষ জানায় ছইজুদ্দিনকেও স্বপ্না নিয়মিত খাবার দিতো এবং এই সুবাদে সে স্বপ্নাকে বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। স্বপ্না এতে রাজি না হওয়াতেই তাকে ছুরিকাঘাত করা হতে পারে।

একই এলাকায় ভারা থাকা অবস্থায় ঘটনার পরপর আসামী ছইজুদ্দিন, তার বড় ছেলের পরিবার এবং তার মেয়ের পরিবার দ্রুত পালিয়ে যাওয়া এবং তাদের সঠিক ঠিকানা কারো কাছে না থাকার বিষয়টি বেশ রহস্যজনক। এব্যপারে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়। মামলার আয়ু এসআই মোঃ শেখ সজল হোসেন জানান, মামলার তদন্ত চলছে এবং আসামীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

(জে/এসপি/মে ১৯, ২০২১)