রাজবাড়ী প্রতিনিধি : ১৩তম গ্রেড প্রাপ্তির পূর্বেই চাকরির বয়স ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেলের বাস্তবায়ন চান রাজবাড়ীর জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার সরকারি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে উচ্চতর স্কেলের ফাইল পরে থাকা, অপরদিকে ১৩তম গ্রেডের কাজ শেষপর্যায় হওয়ায় শিক্ষকরা এমন দাবী করেন। 

তারা বলেন, ১৩তম গ্রেড প্রদানের পর উচ্চতর স্কেলেরকাজ করা হলে তাদের একই কাজ দুইবার করতে হবে, এতে করে তারা হয়রানীর স্বীকার হবেন বলেমনে করেন। উপজেলাশিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চাকরিতে ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্য হয় উপজেলার ৯৭জন সহকারী শিক্ষক। ৯৭ জনের মধ্যে ২০০৮ সালে যোগদান করেন ২৪ জন, ২০০৯ সালে ৩১ জন এবং২০১০ সালে যোগদান করেন ৪২ জন। এদের সবার কাগজপত্র ৩টি অগ্রায়ণপত্রের মাধ্যমে রাজবাড়ীজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে, বর্তমানে সেখানেই রয়েছে ফাইল।বালিয়াকান্দি উপজেলার ৪৩২ জন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেড প্রাপ্য হয়েছে, এদের কাজ উপজেলাশিক্ষা অফিসে চলমান রয়েছে।

বর্তমানে সার্ভিসবুকে শিক্ষকদের তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে। সার্ভিসবুকের কাজ শেষ হলেই উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস ১৩তম গ্রেডের বাকী কাজ সম্পন্ন করবেনএবং অনলাইনে ফিক্সিশন সম্পন্ন করবেন। অপরদিকে ৯৭জন শিক্ষকের উচ্চতর স্কেল সম্পন্ন হলে তাদেরগ্রেড পরিবর্তনের কাজ করা হবে এবং পুনরায় ফিক্সিশন করতে হবে। জাতীয়বেতন স্কেল ২০১৫ এর অনুচ্ছেদ ৭(১) অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রদানে কোন বাধানেই বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি পত্রে বলা হয়। অপরদিকে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে বেতন স্কেল (গ্রেড)উন্নীতকরণের নির্দেশনা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গাড়াকোলাস: প্রা: বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রাশিদুল ইসলামসহ ৯৭জন শিক্ষক উচ্চতর স্কেল প্রাপ্যহয়েছেন, বর্তমানে তাদের ১৩তম গ্রেডের কাজও চলমান রয়েছে।

রাশিদুলসহ বহু সংখ্যক শিক্ষক জানান, আমাদের ১৩তম গ্রেডের কাজ বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতরস্কেলের কাজ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির পূর্বেইযদি ১৩তম গ্রেডের কাজ শেষ হয়ে যায় তাহলে ৯৭ জন শিক্ষকের নতুন করে ফিক্সিশন করতে হবে যাভোগান্তি বাড়াবে। এক্ষেত্রে ১৩তম গ্রেডের কাজ সম্পন্নের পূর্বেই উচ্চতর স্কেলের কাজ সম্পন্নকরার জন্য অনুরোধ করেন তারা।

স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দেশ সেরা প্রধান শিক্ষক মো: শহিদুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বালিয়াকান্দি শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, শিক্ষকদের যেটা আগে প্রাপ্য হয়েছে, সেটাই আগে প্রদানকরা উচিত। প্রথমে ১৩তম গ্রেডের কাজ সম্পন্ন করলে ৯৭জন শিক্ষকের দুইবার ফিক্সিশন করতে হবে।আর যদি উচ্চতর স্কেলের কাজ আগে সম্পন্ন করা হয় তাহলে এক ফিক্সিশনেই ৯৭জন শিক্ষকের কাজসম্পন্ন হবে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টিতে আন্তরিক হলে শিক্ষকগণ উপকৃত হবেন বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আশরাফুল হক বলেন, সম্প্রতি ৯৭ শিক্ষকের চাকরি ১০বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেলের কাগজপত্র জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। ১৩তম গ্রেডের কাজ প্রায়শেষের দিকে, দুয়েকদিনের মধ্যে হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রেরণ করা হবে। ১৩তম গ্রেডের কাজসম্পন্নের পূর্বেই উচ্চতর স্কেলের কাজ সম্পন্নের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি অফিস সহকারীরসাথে কথা বলে জানাতে হবে।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো: সদর উদ্দিন শেখ বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়ের ৪৩২ জন সহকারি শিক্ষকের ১৩তম গ্রেডের কাজ চলমান রয়েছে, যা কয়েকদিনের মধ্যেইশেষ হবে। ১৩তম গ্রেডের পূর্বে যদি উচ্চতর স্কেল অনুমোদন হয়, তাহলে একই কাজ দ্বিতীয়বারকরতে হবে না। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কথাবলবো, যাতে করে শিক্ষক এবং আমার অফিস উভয়ের সুবিধা হয়।

(একে/এসপি/মে ১৯, ২০২১)