সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথায় তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার দুই আসামির নাম কাটাতে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় মাতুব্বার দিপু মোল্যার বিরুদ্ধে। চাঁদা না দেওয়ায় পুলিশের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই আসামীদের পরিবারকে হুমকিও দিচ্ছে ওই মাতুব্বর। অভিযুক্ত দিপু মোল্যা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের সোরাপ মোল্যা ওরফে মান্দারের ছেলে।

জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল সালথা উপজেলার সরকারি স্থাপনায় তাণ্ডবের পর সালথা থানা পুলিশ বাদী হয়ে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল রাজ্জাক মোল্যার ছেলে সানোয়ার মোল্যা (৬০) ও শাহজাহান মোল্যা (৬৫) নামে দুই ব্যক্তিকে আসামী করা হয়।

আসামী সানোয়ার মোল্যা মেয়ে সেলিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সালথার হামলার মামলায় আমার বাবা ও চাচা আসামী হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তারা পলাতক থাকার সুযোগে এলাকার প্রভাবশালী মাতুব্বর দিপু মোল্যা প্রতিদিন আমাদের বাড়িতে এসে পুলিশের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। দিপু বলে যে, তোর বাবা ও চাচাকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে দিবো, তাতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। টাকা না দিলে তোদের বাড়ির অন্য পুরুষরাও মামলায় আসামী হবে। ওসি সাহেবের সাথে কথা হয়েছে, উনি আমাকে বল্লভদী ইউনিয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। এখানে কে আসামী হবে আর কে না হবে এটা সম্পূর্ণ আমার দায়িত্ব। দিপুর ভয়ে আমরা তাকে ২ হাজার টাকাও দিই। কিন্তু তিনি ওই ৫০ হাজার টাকার দাবিতে প্রায়ই আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।

সেলিনা বেগম আরো বলেন, আমাদের বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। আমরা ৭-৮ জন মহিলা বাড়িতে থাকি। দিপু যেভাবে প্রায়ই আমাদের বাড়িতে এসে টাকার জন্য হানা দেয়, এতে আমরা চরম আতঙ্কে রয়েছি।
এ বিষয় অভিযুক্ত দিপু মোল্যার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুজ্জামান বলেন, এই ঘটনা আমিও শুনেছি। দিপুকে আমরা খুজছি। তাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, লকডাউনকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে গত ৫ এপ্রিল রাতে সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে তাণ্ডব চালায় কয়েক হাজার উত্তেজিত জনতা। এ সময় দুটি সরকারি গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়। এ ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

(এন/এসপি/মে ২০, ২০২১)