সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে চলা লকডাউনে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে ফরিদপুরের সালথায় স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করে সমালোচিত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষা অফিসার।

রবিবার সকাল ১১টায় উপজেলা সদরের সালথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে শতাধিক শিক্ষক নিয়ে দুই ঘন্টাব্যাপী এ মিটিং করেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. বজলুর রহমান। এতে শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলা সদরের মনির মোল্যা ও জুয়েল হোসেন নামে দুই ব্যক্তি বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে আমরা ঈদের নামাজ পর্যন্ত পড়তে পারি নাই। সভা-সমাবেশ, বিয়ে ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসনও রয়েছে কঠোর অবস্থানে। এরমধ্যে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে শিক্ষা অফিসার কিভাবে শতাধিক শিক্ষকদের পাশাপাশি বসিয়ে মিটিং করলেন। এটা আমরা বুঝতে পারছি না। অথচ সাধারন মানুষ যদি লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করতো তাহলে সরকারি কর্মকতারাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেন এবং জরিমানা করতেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. কাউসার তালুকদার, সাধারন সম্পাদক জাহিদুর রহমান ও যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সাহেবুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের মধ্যে জন-সমগম ঘটানো নিষেধ থাকলেও সরকারি কোনো নির্দেশ বা নির্দশনা ছাড়াই উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বজলুর রহমান আমাদেরকে সালথা স্কুলে ডেকে ছিলেন। আমরা শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত হয়ে ছিলাম। তবে কি বিষয় তিনি মিটিং করলেন তা আমরা বুঝতে পারিনি। তিনি আমাদের ডেকে নিয়ে এক জায়গায় পাশাপাশি বসিয়ে নানা বিষয় গল্প করেছেন। শিক্ষা কার্যক্রম বা সরকারি কোনো প্রয়োজনীয় বিষয় তিনি আলাপ করেননি। প্রয়োজন ছাড়া লকডাউনের এভাবে আমাদের নিয়ে মিটিং করায় আমরা বিব্রত হয়েছি। মানুষ আমাদের নিয়ে সমালোচনা করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহাকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বজলুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গুগল মিটের মাধ্যমে শিক্ষার্থী পাঠদান নিশ্চিত করণের লক্ষে মিটিংটি করা হয়েছে। এখানে সকল শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তবে কিছু শিক্ষক বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তারা চাচ্ছে না গুগল মিটের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক। তাই তারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মিটিংটাকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ হাসিব সরকার বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করার বিষয়টি আমি জানতে পেরে ওই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোন করেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছেন, উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এই মিটিংটি করা হয়েছে। এরপর আমি তার কাছে নির্দেশনার কপি চেয়েছি। কিন্তু তিনি এখনও পর্যন্ত নির্দেশনা কপি আমাকে দেয়নি। বিষয়টি আরো খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এন/এসপি/মে ২৩, ২০২১)