২ জুন, ১৯৭১
পূর্ব বাংলার সাম্প্রতিক ট্রাজেডি কখনোই পাকিস্তানের ঘরোয়া বিষয় হতে পারে না
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ মুজিবনগরে অল-ইন্ডিয়া রেডিওর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের জনগণ যে কোনো মূল্যে এর স্বাধীন অস্তিত্বকে রক্ষা করবে।
বাংলাদেশ সবার সাথে বিশেষ করে প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী। তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্ববাসীকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, পাকিস্তানি কাঠামো থেকে আমাদের মাতৃভূমিকে পৃথক করার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করছি। এই কামাঠোর অধীনে আপোষ করার কোন অবকাশ নেই।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী মুক্তাঞ্চলে স্থানীয় ও বিদেশী সাংবাদিকদের সাথে আলোচনাকালে বলেন, আমরা বাংলাদেশের ইস্যুর রাজনৈতিক মীমাংসার জন্য কোনো মধ্যস্থতা চাই না। হাজার হাজার নিরপরাদ ও নিরস্ত্র হত্যাকারীদের সাথে রাজনৈতিক মীমাংসার কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য, পৃথক জাতি হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়া। এজন্য আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো। হয় আমরা বিজয় অর্জন করবো নতুবা মৃত্যুবরণ করবো। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রশ্নে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে নির্দেশ দিতে জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্টের কাছে আবেদন জানান।
পাকবাহিনী শক্তি বৃদ্ধি করে পিরোজপুরের পেয়ারা বাগান এলাকা ঘেরাও করে। পাকসেনারা স্থানীয় লোকদের ধরে এনে পেয়ারা গাছ কাটার কাজে লাগায় এবং নিরীহ লোকদের ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালায়। এতে বহুলোক নিহত হয়।
পোপ ষষ্ঠ পল এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের জনগণের দুঃখ-দুর্দশায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ভাগ্যহত মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করেন।
বৃটিশ এমপি (শ্রমিক দল) মাইকেল বার্নস কলকাতায় বলেন, পূর্ব বাংলার সাম্প্রতিক ট্রাজেডি কখনোই পাকিস্তানের ঘরোয়া বিষয় হতে পারে না। বাঙালিদের রক্ষার্থে অবশ্যই বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/পিএস/অ/জুন ০২, ২০২১)