স্বামী-শাশুড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাইয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে ১ বছরের শিশু পৃত্রকে রেখে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধূ জুথি রানী প্রামানিক (২৩)। ঘটনাটি ঘটেছে, রবিবার দুপুরে আত্রাই উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জামগ্রামে।
গৃহবধূ জুথি রানী হাসপাতালে মারা যাবার পর থেকে তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা-ঢাকা দেয়।
জুথি রানীর দরিদ্র পিতা ও স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে পুরো ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার জন্য স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বিভিন্নমহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। এমনকি থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে কোন মামলা গ্রহন করেনি বলে জুথি রানীর পিতার পরিবারের অভিযোগ। ফলে জুথির দরিদ্র পিতা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩ বছর আগে আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের তিলাবাদুরী গ্রামের দরিদ্র নয়ন কুমার প্রামানিকের কন্যা একই ইউনিয়নের জামগ্রামের জনৈক সুদেব চন্দ্র প্রামানিকের পুত্র সঞ্জয় প্রামানিক প্রায় ৪ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই জুথি রানীকে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি যৌতুক দাবির পাশাপাশি খুঁটিনাটি নানা অযুহাতে শারিরিক ও মানসিক নির্য়াতন শুরু করে। প্রায় বছর খানেক আগে তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। তখন অনেকেই ভেবেছিল, এবার বুঝি তাদের সংসারের অশান্তি দূর হবে। কিন্তু তা আর হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হানিফ পালোয়ান জানান, এর আগে গৃহবধু জুথি রানীর পরিবারের পক্ষে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি মিমাংসার লক্ষে একাধিকবার ডেকেও জুথি রানীর স্বামী বা শ্বশুর পরিবারের কেউ উপস্থিত না হওয়ায় বিষয়টির কোন সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার সকালে আত্রাই থানায় মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, এব্যাপারে গৃহবধুর অভিভাবকরা কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে মামলা রেকর্ড করা হবে। তবে ইতোমধ্যেই একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
(বিএস/এসপি/জুন ০৭, ২০২১)