শিতাংশু গুহ


ভেতরে ভেতরে পশ্চিমবঙ্গ পাল্টে যাচ্ছে। এই বদলে যাওয়াটা ইতিবাচক নয়, নেতিবাচক। পশ্চিমবঙ্গে ভোট শেষ হয়েছে, হিংসা ও অশান্তি থামেনি। এটি সামনে বাড়বে, কারণ ইসলামী মৌলবাদ সেখানে ঘাঁটি গেঁড়ে বসছে। বাংলাদেশ দিনে দিনে চরম সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠছে। এটা রাজনৈতিক ব্যর্থতা। এই সত্য বললে আপনি সাম্প্রদায়িক, মিথ্যা প্রচারণা। কলকাতায় ‘ইসলামিয়া হসপিটাল’ চালু হয়েছে, উদ্বোধন করেছেন মমতার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মিডিয়ায় এসেছে ঐ হাসপাতালে সকল কর্মচারী ডাক্তার, নার্স একটি ধর্মের। তবে হিন্দু রুগী এক্সেপ্টেড। একজন মন্তব্য করলেন, ভাগ্যিস যোগীর রাজ্যে ‘হিন্দু হাসপাতাল’ চালু হয়নি, হলে এতক্ষনে স্যেকুলার বুদ্ধিজীবীরা ‘গেল গেল’ বলে রাস্তায় নেমে পড়তেন!

ক’দিন আগে দেখলাম, বাম ও ইসলামী মৌলবাদের ‘ডার্লিং’ মহুয়া মৈত্র লোকসভায় আগুনঝরা ভাষণ দিয়েছেন, তা দেখে একজন সাধারণ মানুষ বললেন, ‘মহুয়া মৈত্র বড় হলে 'অরুন্ধতী রায়' হবেন। নচিকেতা ঘোষ জব্বর কথা বলেছেন, ‘বাঙ্গালীকে কেনা যায়না!’, কিন্তু বাংলাদেশে গিয়ে সরকারি হেলিকপ্টারে চড়ে ফেলে আসা দেশের বাড়ীতে গিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকলেও মুখ ফুটে বলতে পারেননি, কেন দেশ ছেড়েছেন? পাঁচ টাকায় ডিম্-ভাতে যাঁরা বিক্রী হন তাঁদের মুখে আর যাই হোক লম্বালম্বা কথা মানায় না? বাংলাদেশের হিন্দু পশ্চিমবাংলায় ‘অশনি-সঙ্কেত’ দেখতে পাচ্ছেন, কারণ তাঁরা ‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরের মেঘ’ দেখলেই ভয় পান! শঙ্খ ঘোষ ওপার বাংলা থেকে পালিয়ে এসে রচনা করেছেন, ‘বাবরের প্রার্থনা’, কিন্তু ভুক্তভুগী হয়েও তিনি নোয়াখালী বা ঢাকার প্রার্থনা শুনতে পাননি।

তৃণমূলের বিজয়ের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: আবদুল মোমেন পৃথক পৃথক বার্তায় মমতা ব্যানার্জীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটি ভালো। আপা আর দিদি মিলে এইবার দুই বাংলাকে মৌলবাদ মুক্ত করলে এবং দুই বাংলায় গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল করলে মানুষ বেঁচে যায়। মমতার বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতা, এপার বাংলায় ‘মদিনা সনদ’ দেখতে ভালো লাগেনা? বাংলাদেশের মানুষ মমতা ব্যানার্জীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তাঁদের বলি, ভাই, মমতা ব্যানার্জী’র মত সংখ্যালঘু’র পাশে দাঁড়ান!! মমতা ব্যানার্জী’র পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাগুরু হিন্দু সংখ্যালঘু মুসলিমের কাছে মার খাচ্ছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সংখ্যাগুরু মুসলমানের কাছে মার খাচ্ছে। কি চমৎকার, তাই না? ভারত ভাগের পর বাঙ্গালী হিন্দু এক ভয়ঙ্কর মানবিক সংকটে পড়েছে। এতকাল সেটি পূর্ব-বাংলায় ঘনীভূত ছিলো, এবার তা পশ্চিমবাংলায় আছড়ে পড়ছে।

সিপিএম তসলিমা নাসরিনকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে, কারণ তসলিমা ‘সাম্প্রদায়িক’? ২০২১-এ অ-সাম্প্রদায়িক ‘আব্বাস ভাইজান’ সিপিএম-কে পুরো পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে অন্যদের তাড়াবেন? পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বেড়াতে পছন্দ করেন, এটি ভালো অভ্যাস, অনেকে ‘কাশ্মীর’ যেতে পছন্দ করেন, তাঁদের বলা যায়, আর ক’টা দিন অপেক্ষা করুন, পশ্চিমবঙ্গে বসেই নিখর্চায় ‘কাশ্মীর’ দেখতে পাবেন। কাশ্মীর অশান্ত কারণ প্রতিবেশী হচ্ছে পাকিস্তান; পশ্চিমবাংলা অদূর ভবিষ্যতে অশান্ত হবে কারণ প্রতিবেশী বাংলাদেশী মৌলবাদীরা আইএসআই বা আরসা-র সহায়তায় ‘খেলা হবে’ বলে খেলবে। অবশ্য চিন্তার কারণ নেই, মমতা ব্যানার্জী’র দৃষ্টি এখন দিল্লির দিকে, তিনি দিল্লি গেলে কলকাতা হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে, কিন্তু ভারত ডুববে!

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।