আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইথিওপিয়ার যুদ্ধপ্রবণ টাইগ্রে অঞ্চলের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য। পরে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম সমন্বয় সংস্থা ইউএনওসিএইচএ-এর প্রধান মার্ক লোকক বলেন, এ দুর্ভিক্ষ আরও প্রকোট আকার ধারণ করবে। ছড়িয়ে পড়তে পারে পার্শ্ববর্তী আমহার ও আফার এলাকায়। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে শিগগিরই মানবিক সাহায্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

টাইগ্রে অঞ্চলের খাদ্যসংকটের বিষয়টি এখন পৃথিবীর যেকোন অঞ্চল থেকে প্রকোট। এমনকি ২০১১ সালে সোমালিয়া দুর্ভিক্ষের পর এটি হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্যসংকট। টাইগ্রের পশ্চিমাঞ্চলের কফতা হুমেরা জেলায় বসবাসকারীরা বলছে, খাবার সংকটে গত এক সপ্তাহ তাদের অনাহারে থাকতে হয়েছে। যুদ্ধে তাদের ফসলি জমি ধ্বংস হয়েছে, লুট করা হয়েছে তাদের গবাদিপশু। ৪০ বছর বয়সী একজন কৃষক বলেছেন, খাদ্যের অভাবে মৃত্যুকে খুব কাছ দেখে দেখছি। কেউ আমাদের কোন ধরনের খাদ্যসহায়তা করছে না।

যুদ্ধ ও অতি খরায় টাইগ্রে ও পার্শ্ববর্তী ওলো অঞ্চলে ১৯৮৪ সালেও একবার দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। তখন এক মিলিয়ন মানুষ প্রাণ হারান। টাইগ্রেতে বহুদিন ধরে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাত চলছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৭ লাখ মানুষ। অঞ্চলটিতে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে কোনো ধরনের সাহায্য সংস্থাকে ঢুকতে দিচ্ছে না আবি আহমেদের সরকার।

শান্তিতে নোবেলজয়ী আবি আহমেদ ২০১৮ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। এরআগ পর্যন্ত অঞ্চলটির রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ ছিল টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট বা টিপিএলএফের হাতে। সংগঠনটি ১৯৯১ সালে সামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। কিন্তু ২০২০ সালে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী এবং টিপিএলএফ-এর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষের জেরেই অঞ্চলটিতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। বিবিসি, আল জাজিরা।

(ওএস/এসপি/জুন ১১, ২০২১)