নাটোর প্রতিনিধি : সিংড়ায় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু সন্তানের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করায় নিরাপত্তাহীনতায়  দিন কাটাতে হচ্ছে ওই শিশুর পরিবারকে। নিরাপত্তার অভাবে শিশুটিও স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

ওই শিশুর বাবা ইস্রাফিল হক কাজল নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার সিংড়া থানায় একটি জিডি করেছেন। ইস্রাফিল হক কাজল তার ছেলে উপজেলার বিয়াম ল্যাবরেটারি স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ইকরাম আল কাফি কাব্যকে বেত দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করায় স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লায়লা পারভিন ও সহকারী শিক্ষক আরিফ কাওছারের বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই শিক্ষককেই শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশে সাময়িকভাবে বরখাস্থ করা হয়। সিংড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জিডি দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, গত ২৪ আগষ্ট টিফিনের পর দেরীতে ক্লাসে যাওয়ায় ইকরাম আল কাফি সহ ১১ ছাত্রকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লায়লা পারভিনের নির্দেশে সহকারী শিক্ষক আরিফ কাওছার বেত দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। বেত্রাঘাতে পুরুষাঙ্গে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় ইকরাম আল কাফির প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্ত ঝড়ে পড়ে। লজ্জা ও ভয়ে ইকরাম আল কাফি ঘটনাটি চেপে যায়। কিন্ত স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে না পারায় বিষয়টি জানাজানি হলে ইস্রাফিল হক কাজল ২৮ আগষ্ট ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা সালমা খাতুনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে এই বেত্রাঘাতের খবর জানতে পেরে শিক্ষা মন্ত্রী ড. নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্দেশে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী ওই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে নিয়ে যান। অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়াম ল্যাবরেটারি স্কুলের ওই দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন এবং তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। মঙ্গলবার ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা থাকলে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত তা জমা দেওয়া হয়নি।

এদিকে ইস্রাফিল হক কাজল জানান, ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর থেকে মোবাইল ফোন সহ বিভিন্নভাবে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া না হলে ঘটনা প্রবাহ ভিন্নদিকে মোর নিবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের হুমকির মুখে ছেলের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তিনিও এখন পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সালমা খাতুন জানান, নিরাপত্তা চেয়ে ইস্রাফিল হক কাজলের থানায় জিডি করার বিষয়টি তার জানা নেই। এর আগে তিনি এমন অভিযোগ করলেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিপুর্বে ওই শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইভাবে শিক্ষা মন্ত্রী নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের বেত্রাঘাত না করার জন্য শিক্ষকদের বলা হয়েছে।

(এমআর/এটিআর/সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪)