স্টাফ রিপোর্টার : দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে উন্নয়নে ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড’ গঠন করেছেন। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের প্রথম অর্থ খরচ হতে যাচ্ছে পায়রা সমুদ্রবন্দরের সাড়ে ১০ মিটার গভীরতা সম্পন্ন ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল নির্মাণ কাজে।

রোববার (১৩ জুন) রাজধানীর হোটেল রেডিসনে এই ড্রেজিং কাজটি করার জন্য বেলজিয়াম ভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি ‘জান ডে নুল’র সঙ্গে চুক্তি সই করেছে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, দেশের ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে দেশের উন্নয়নে ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী ‘বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড’ তৈরি করেছেন এবং ২০২১ সালের ১৫ মার্চ তহবিলটির উদ্বোধন করেছেন। এই তহবিলের প্রথম গ্রাহক হিসেবে তিনি পায়রা বন্দরকে বেছে নিয়েছেন এবং আলোচ্য ড্রেজিং কাজটি এই তহবিল থেকে অর্থায়নের অনুমোদন করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে ড্রেজিং কাজটি করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় প্রায় ৫৩ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। দেশের প্রচলিত যাবতীয় বিধিবিধান প্রতিপালন করে আলোচ্য ড্রেজিং কাজটি সম্পাদনের বিশ্বখ্যাত বেলজিয়াম ভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডে নুলের সাথে আজ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তি সই হয়েছে।

পায়রা বন্দরটি আন্দারমানিক নদীর তীরে রাবনাবাদ চ্যানেলে অবস্থিত। নিরবচ্ছিন্নভাবে জাহাজ চলাচলের জন্য বর্তমানে চ্যানেলে মেইন্টেন্যান্স ড্রেজিং চালু রয়েছে, যার ফলে চ্যানেলের গভীরতা ৬ দশমিক ৩ মিটার বজায় রাখা হচ্ছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে বন্দরে অধিকতর বড় জাহাজ ভিড়ানোর জন্য ইতোপূর্বে বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি ‘জান ডে লু’র সাথে একটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ চুক্তি সই হয়েছিল বলেও জানায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর এখন সেটা নিজস্ব অর্থায়নে করার সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ সরকার।

রাবনাবাদ চ্যানেলে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলের গভীরতা ১০ দশমিক ৫ মিটারে উন্নীত করা সম্ভব হলে বন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গোবাহী এবং ৩ হাজার টিইইউ বিশিষ্ট জাহাজ বন্দরে সরাসরি ভিড়তে সক্ষম হবে বলেও উল্লেখ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এই বন্দর কর্তৃপক্ষ আরও বলছে, দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বরে পায়রা বন্দরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী বন্দরটিতে জাহাজ চলাচলের উদ্বোধন করেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ১৩৪টি বাণিজ্যিক জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করেছে, যা থেকে সরকার প্রায় ৩০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে।

(ওএস/এসপি/জুন ১৩, ২০২১)