সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তের কারণে এক বছর ধরে আটকে আছে কেন্দুয়ার ১শ ২৪ গ্রাম পুলিশের বেতন ভাতা। বেতন ভাতার ফাইল লাল ফিতায় বন্দি থাকায় সঠিক সময়ে ভাতা না পেয়ে গ্রাম পুলিশের ওই সদস্যদের মাথায় হাত পড়েছে। তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক দুঃখে কষ্টে খেয়ে না খেয়ে কোন মতে দিন যাপন করছেন। 

কান্দিউড়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্য নল্লা গ্রামের আব্দুল কদ্দুস বলেন, আমরা বেতন ভাতাই পাই সামান্য কিছু টাকা। এই টাকা দিয়াই আমরার সংসার চলে। কিন্তু এক বছর ধরে বেতন ভাতা না পেয়ে খুব কষ্টে আছি। ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আমরা সরকারের কাছে জরুরী ভাবে আমাদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের অনুরোধ করি।

গড়াডোবা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্য তাসলিমা আকন্দ বলেন, আমরা ছোট কর্মচারী তাই আমাদের বেতন ভাতা নিয়ে অবহেলা করা হয়। আমরার যদি এক বছরের বেতন ভাতা ও দুই বছরের হাজিরা ভাতা বকেয়া থাকে, তাহইলে আমাদের জীবন কেমনে বাঁচে? আমাদের সন্তান আছে, সংসার আছে, সন্তানকে লালন পালন করে সংসার সুন্দর করার জন্যেই চাকুরি করি। আমরার বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের জন্য জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

গ্রাম পুলিশের সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের বেতন ভাতা পরিশোধের জন্য চলতি বছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব (স্থানীয় সরকার বিভাগ) বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি হাট বাজারের ইজারা লব্দ আয়ের অবশিষ্ট ৪১% অর্থ হতে ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারীগনের ইউপি অংশের বেতন ভাতা পরিশোধের অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন।

তিনি তার আবেদনে বলেছেন, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ইউপি সচিবদের বকেয়া ৫ লাখ ৮১ হাজার ৪৩৫ টাকা ও ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জুলাই ২০২০ হতে ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ৮ লাখ ১০ হাজার ৯৯৪ টাকা সহ মোট ১৪ লাখ ২ হাজার ৪২৮ টাকা এবং গ্রাম পুলিশের বকেয়া জানুয়ারি হতে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ৪ লাখ ১৬ হাজার ৫ শ টাকা করে ১১ মাসের বকেয়া ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৫ শ টাকা।

ইউপি সচিব ও গ্রাম পুলিশের বকেয়া সাকুল্যে ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৮ টাকা হাট বাজারের ইজারা লব্দ আয়ে ৪১% অর্থ হতে পরিশোধের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদনের জন্য কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের নভেম্বর ২০২০ মাসের সভায় সিদ্ধান্তও দেয়া আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মন্ত্রনালয়ে গ্রাম পুলিশের সদস্যদের বেতন ভাতার ফাইল লাল ফিতায় বন্দি আছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মইন উদ্দিন খন্দকার বলেন, ইউপি সচিব ও গ্রাম পুলিশের বেতন ভাতা (ইউপি অংশ) দীর্ঘদিন ধরেই বকেয়া পরে আছে। বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের জন্য জেলা প্রশাসক নেত্রকোণা মহোদয়ের কার্যালয় থেকে ইতিমধ্যে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন পেলেই বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধ করা হবে।

(এসবি/এসপি/জুন ১৬, ২০২১)