ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার অনুসারীরা এক সাংবাদিকের বসতঘরে ঢুকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করেছে। এ ঘটনায় ওই সাংবাদিকের মা ও ছেলে সহ আরও দুইজন আহত হয়েছে। আহতরা হল, বেবী রাণী (৬৫), ছেলে রন্তু চন্দ্র (২০)।

আহত প্রশান্ত সুভাষ চন্দ্র (৪৭) দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের বিশেষ প্রতিনিধি ও আঞ্চলিক অনলাইন পোর্টাল চলমান সময়ের চীফ রিপোর্টার এবং উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহাজাতপুর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির স্বপন কুমারের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুর পৌনে ১টার দিকে উপজেলার সিরাপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের শাহাজাতপুর গ্রামের কবিরাজ বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

সুভাষের মা বেবী রাণী ও ছোট ভাই প্রজীৎ সুভাষ চন্দ্র অভিযোগ করেন, গত ৫ মাস কোম্পানীগঞ্জে আ’লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্বে অস্থিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। এই সময়ে সুভাষের ফেসবুক স্ট্যাটাস এবং সংবাদ পরিবেশন নিয়ে সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা তার ওপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। কিছু দিন আগে একটি সমাবেশে বকৃক্তাকালে প্রকাশ্যে কাদের মির্জা সুভাষকে হাঁটুর নিচে ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য তার অনুসারীদের নির্দেশ দেন।

আজ দুপুর পৌনে ১টার দিকে সুভাষ তার বসত ঘরের সামনের কক্ষে একা শুয়ে ছিলেন। এ সময় মির্জা কাদেরের অনুসারী কেচ্ছা রাসেল, পিচ্ছি মাসুদ, টুটুল মজুমদার, ইমনের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৪৫জন অস্ত্রধারী হঠাৎ বসতঘরে হামলা চালায়। এ সময় তারা সুভাষকে লোহার রড বেধড়ক পিটিয়ে বাম হাতের দুটি অংশে ভেঙ্গে দেয় এবং মাথায় ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর আহত করে।

এ সময় সুভাষের মা এবং ছেলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরকেও বেধড়ক পেটানো হয়। এক পর্যায়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের শৌর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বীরদর্পে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরে তাকে তার স্বজনেরা উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালীর সদরে প্রেরণ করে।

এ বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার এক অনুসারী ফোন রিসিভ করে জানায় উনি বিশ্রামে আছে।

ঘটনার পর পরই নোয়াখালী জেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা সাংবাদিক সুভাষের ওপর হামলাকারী এবং নির্দেশ দাতাকে দ্রুত আইনের আওতায় দাবি জানিয়েছেন। সাথে সাথে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দাও প্রতিবাদ জানান।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো.আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এস/এসপি/জুন ২৪, ২০২১)