শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলার গঙ্গানগর বাজারে সোমবার (২৮ জুন) রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নয়টি দোকান ভস্মিভূত হয়ে ৫০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ও নগদ টাকাসহ প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বব্যবসায়ীরা। সংবাদ পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মন্দীপ ঘরাই তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিকে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু সার্বিক সহায়তা নিয়ে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বাজারের নৈশপ্রহরী ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ২৮ জুন সোমবার রাত ১১ টার দিকে মান্নান বেপারীর লন্ড্রীর দোকান থেকে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। আগুন লাগার পর পরই নৈশ প্রহরীরা বাজারের মসজিদেরর মাইক থেকে আগুন লাগার ঘোষণা দিলে শত শত এলাকাবাসী আগুন নেভানোর জন্য এগিয়ে আসেন।

অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থলে আসেন। ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত একটায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটি দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত এবং ৮টি দোকানের মালামাল সম্পূর্ণ ভষ্মিভীত সহ মোট ৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দোকানদার ও বাজার কমিটির প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী আনুমানিক ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গঙ্গানগর বাজার বব্যবসাী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল বাতেন জানান, মোট ৯ জন ব্যবসায়ীর ঘরসহ দোকানের মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা হলেন, পাইকারি মুদি দোকানদার দিদার খান, ইলেকট্রনিক্স ও বিকাশের দোকানদার মতিন মাদবর, কাঁচামালের আড়তদার খলিল মাদবর, লন্ড্রী দোকানদার মান্নান বেপারী, বাকালু দোকানদার আবু আলেম, মোহসীন কাজী ও সিদ্দিক ফরাজী, মুদি দোকানদার কালু ভূইয়া এবং চা বিক্রেতা শামসুদ্দিন চোকদার।

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন মাস্টার আমজাদ হোসেন বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর পাই গঙ্গানগর বাজারে আগুন লেগেছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করি। জাজিরা উপজেলার একটি ইউনিটসহ মোট দুইটি ইউনিটের প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটের চেষ্টায় রাত ১টার সময় আগুন সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে আসে। তিনি আরো জানান, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মন্দীপ ঘরাই বলেন, সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাই। রাত আড়াইটা পর্যন্ত গঙ্গানগর বাজারে অবস্থান শেষে ফিরে আসি। ব্যবসায়ী সমিতির লোকদের দায়িত্ব দিয়েছি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে আবেদন করার জন্য। তাদের আবেদন পেলেই সরকারি তহবিল থেকে সহায়তা প্রদান করা হবে।

শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেছেন, জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলমান থাকায় তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। অগ্নিকান্ডের খবর তিনি সোমবার রাতে সাথে সাথেই মুঠোফোনে জেনেছেন। তাৎক্ষনিক তিনি প্রশাসন, ফায়ার ষ্টেশন ও দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করতে। তিনি জানান, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গঙ্গানগর বাজার পরিদর্শনে ২/১ দিনের মধ্যই আসবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যক্তিগত ও সরকারিভাবে সকল ধরনের সহায়তা প্রদানসহ তাদের পাশে দাড়ানোর কথাও তিনি জানিয়েছন।

(কেএন/এসপি/জুন ২৯, ২০২১)