আশজাদ রসুল সিরাজী, গাজীপুর : গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর বারেন্ডা এলাকার বহুল আলোচিত কিশোরী ভিকটিম (১২) হত্যা মামলার রহস্য ৮ মাস ১৩ দিন পর উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর।

গ্রেফতারকৃতরা নিলফামারী জেলার চিলাহাটী মাষ্টার পাড়া এলাকার রেজাউল ইসলামের ছেলে মোঃ সাঈদ ইসলাম (১৯) ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা চৌরাটারী এলাকার মোঃ শফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ রনি মিয়া (২১)।
বুধবার(১৪জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এই বিষয়ে পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, ডিআইজি পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কাওছার উদ্দিন গত ১১/০৭/২০২১ তারিখ হতে মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।

মামলার ঘটনার পর পিবিআই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে থানায় হত্যা মামলা রুজু হওয়ার পর স্ব-উদ্যোগে পিবিআই গাজীপুর জেলা মামলার তদন্তভার গ্রহন করে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ২জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমকে প্রেম নিবেদন করে সাড়া না পেয়ে গত বছরের অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ সকাল ৯টার পর ভিকটিমের বসত ঘরে উভয়ে মিলে ভিকটিমকে ধর্ষন করে। ধর্ষণের ঘটনাটি ভিকটিম সবাইকে বলে দিতে পারে এই ভয়ে তারা ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা নিজেদেরকে ঘটনার সাথে জড়িয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান আরো জানান,গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রনি ও ভিকটিম একই বাসার পাশাপাশি রুমে ভাড়া থাকত। রনির বন্ধু মিলন, হাসান ও সাঈদ, রনিদের পাশের বাড়ীতে ভাড়া থাকত এবং সে সুবাধে রনিদের বাসায় মিলন, হাসান ও সাঈদ তিন বেলা টাকার বিনিময়ে খাওয়া দাওয়া করত। রনির বন্ধু মিলনের সাথে ভিকটিমের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। রনি ভিকটিমদের পাশের রুমে ভাড়া থাকার প্রেক্ষিতে ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করত। রনির বন্ধু সাঈদও ভিকটিমকে পছন্দ করত।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা উল্লেখিত বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার মনঃস্থির করে এবং গত বছরের নভেম্বর মাসে বাসাটি ছেড়ে দেয়। রনি বিষয়টি বুঝতে পেরে অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ সকলে যখন কর্মস্থলে যায় তখন রনির বন্ধু সাঈদ রনির বাসায় সকালের খাবার খেতে আসালে রনি ও সাঈদ সলাপরামর্শ করে ভিকটিমের সাথে দৈহিক মেলামেশা করার সিন্ধান্ত নেয়। রনি খেলার ছলে ভিকটিমকে কোলে করে ভিকটিমের বসতঘরের বিছানায় শুইয়ে তার পড়নের কাপড় খোলার চেষ্টা করলে ভিকটিম বাঁধা দেয়। তখন সাঈদ ভিকটিমের পা ধরে রাখে ও রনি ভিকটিমের দুই হাত বেঁধে মুখে বালিশ চাপা দেয়। প্রথমে রনি ভিকটিমকে ধর্ষণ করে ও সাঈদ তার মোবাইলে রনির ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে। অতঃপর সাঈদ ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার ভয়ে রনি ও সাঈদ ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

(এস/এসপি/জুলাই ১৪, ২০২১)