শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : উত্তরের দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে জনপ্রিয় সুস্বাদু-পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ‘ড্রাগন’ চাষ হচ্ছে। এ ফল চাষ করে ঘুরছে অনেকের ভাগ্যে পরিবর্তনের চাকা। দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগি বলেও জানাচ্ছেন কৃষিবিদরা। সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলে ড্রাগন চাষের বিপ্লব সাধিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকেই। তবে, করোনা পরিস্থিতিতে এবার ড্রাগন ফল বাজারজাত করণে হিমসিম খাচ্ছেন, চাষী ও উদ্যোক্তারা

আর এখন আর স্বপ্ন নয়; বাস্তবে দিনাজপুরে বিস্তৃর্ণ ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে জনপ্রিয় সুস্বাদু-পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ বিদেশি ফল ‘ড্রাগন’। সারিবদ্ধভাবে আরসিসি পিলারে বাইকের পুরোনো টায়ারে জড়িয়ে থাকা গাছে ঝুলছে ড্রাগন ফল।এ ফল চাষ করে অনেকে আশাতীত ফলনও পাচ্ছেন। ড্রাগন ফলের বাগানগুলো পরিচর্যা ও ফল উত্তোলনে অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

১৪ বছরের কিশোর মহিদুল ইসলাম জানালেন, তিনিসহ ৩০/৩২ জন শ্রমিক কাজ করেন কাহারোল কান্তা ড্রাগন থামারে। করোনা পরিস্থিতির কারণে তার স্কুল বন্থ থাকায় তিনি এই ড্রাগন বাগানে সময় দিচ্ছে। প্রতিদিন আড়াই;শ কওে টাকা পােেচ্ছ। এই টাকা তার পড়প-লেখার পাশাপাশি সংসারের কাজে লাগছে। দৃষ্টি নন্দিত এ গাছ ও ফল দেখে অনেকেই থমকে দাঁড়া্েচ্ছন। ড্রাগন ফল চাষে সফলতার কাহিনী শুনে অনেকে ছুঁটে আসছেস। শিক্ষার্থীসহ অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন এ ফল চাষে।

এলাকার বিশিষ্টজন বজলুর করিম বাবুল জানালেন, তিনিও ড্রাগন ফল চাষের উদ্যোগ নিচ্ছেন। গেল দু’বছর জেলার চাগিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়েছে দিনাজপুরের ড্রাগন ফল। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতিতে এবার ড্রাগন ফল বাজারজাত করণে হিমসিম খাচ্ছেন, চাষী ও উদ্যোক্তারা। লাভের আশায় নাটোর থেকে দিনাজপুরে উচ্চদামে ড্রাগন ফলের বাগান কিনে এবার বিপাকে পড়েছেন, এক সফল উদ্যোক্তা চাষী আতিকুর রহমান। বাজারের ঠিকমতো সরবরাহ করা গেলে বাগানের টাকা ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যদি বর্তমান পরিস্থিতি থাকে, তাহলে তাকে প্রচুর লোকসান গুণতে হবে এবার বলে জানিয়েছেন আতিক।

বছরের প্রায় সব মৌসুমেই ড্রাগন গাছে ফলন হওয়ায় বিশেষত: বেকার কৃষকরা ঝুঁকছেন ড্রাগন ফল চাষে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অনাবাদি-পরিত্যক্ত জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করছেন।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানালেন, চলতি বছর দিনাজপুরে ৭১ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল স্থানীয় বাজারে সাড়ে ৩’শ টাকা থেকে সাড়ে ৪’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ফল চাষে কৃষককে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছে, কৃষি বিভাগ।দিনাজপুরে মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগি বলে কৃষিবিদরা জানাচ্ছেন। সুষ্ঠু বাজারজাতের ব্যবস্থা করা গেলে উদ্যোগী কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে বলে মনে করছেন তারা।

উত্তরের শষ্যভান্ডার দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগণের চাষ হচ্ছে। এ ড্রাগনের চাষ করে ঘুরছে.অনেকের ভাগ্যের চাকা।সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত খাকলে এবং এই ড্রাগন ফলের ভালো দাম পেলে আগামীতে এ অঞ্চলে ড্রাগন চাষেন পরিধি আরো বেড়ে যাবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

(এস/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২১)