টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলে মধুপুরে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের প্রণোদনা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ গবাদী পশু খামারি ও এলাকাবাসী।

রোববার (১৮ জুলাই) দুপুরে মধুপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সামনে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ বঞ্চিত প্রান্তিক খামারিদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম সাদিক, মধুপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ আহমেদ নাসির, টাঙ্গাইল জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন আকন্দ, মধুপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইজতেমা ইশতিয়াক আহমেদ সজীব প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রকৃত খামারিরা সরকারি প্রণোদনা হতে বঞ্চিত হয়েছেন। যারা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মনোনিত স্ব স্ব ইউনিয়নের মাঠ কর্মীকে চুক্তি মোতাবেক উৎকোচ দিতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। তাদের নিয়েই ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রণোদনার তালিকা করা হয়েছে। প্রকৃত খামারিরা উৎকোচ না দেওয়ায় তাদের নাম তালিকাভূক্ত হয়নি। বক্তারা এ অনিয়াম দূর্নীতির সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেন।

তারা আরও জানান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের প্রণোদনা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি সক্রান্ত একটি পোস্ট বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হারুন অর রশিদের যোগসাজসে ঘুষের বিনিময়ে গবাদি পশু নেই এমন ব্যক্তিকেও প্রণোদনার টাকা দেওয়ার প্রতিকার চেয়ে ১১ জুলাই মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরারব একটি অভিযোগ দিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন আকন্দ।

মধুপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অধীনে ২ হাজার ৬৪ জন খামারির জন্য প্রণোদনার অর্থ ছাড় দেয়া হয়েছে। যারা প্রণোদনার অর্থ পেয়েছেন তাদের কাছ থেকে কৌশলে অর্ধেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন স্ব স্ব ইউনিয়নের প্রাণিসম্পদ দপ্তরের প্রতিনিধিরা। নিয়মানুসারে কমপক্ষে ২ থেকে ৫টি গাভি থাকলে তবেই তিনি প্রণোদনার তালিকাভূক্ত হবেন। কিন্তু ১০১ নং তালিকার প্রণোদনার টাকা পাওয়া গাছাবাড়ি গ্রামের আঃ সাত্তার গত ১০ বছরেও কোন গবাদি পশু পালন করেনি। গাভি না থাকলেও ৮৪ নং তালিকায় প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন ফরিদা বেগম। একই গ্রামের তার ভাই জামালের গরুর সামনে ছবি তুলে ৭৩ নং তালিকার প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন সাজেদুল। সরেজমিনে উপজেলার সর্বত্রই এ চিত্র ফুটে উঠে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মনোনিত প্রতিনিধিরা অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. হারুন অর রশিদ জানান, মাঠ পর্যায়ে এলএসপি’রা (লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার) কাজ করেন। তারা মাঠে পর্যালোচনা করে তালিকা তৈরি করেছেন। প্রণোদনা বিতরণে অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে প্রণোদনার টাকা দেওয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(আরকেপি/এসপি/জুলাই ১৮, ২০২১)