ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : মহান ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা । ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ঈশ্বরদী-আটঘোরিয়া তথা বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর উত্তরোত্তর উন্নতি, সমৃদ্ধি ও অব্যাহত শান্তি কামনা করেন এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং ঈদ মোবারক জানিয়েছেন।

এমপি বিশ্বাস বলেন, করোনাময় দিনে লকডাউনের বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে বন্দি থেকে গত বছরের মতো এবারও এলো আনন্দের ঈদ। করোনা মহামারির কারণে দেশে উৎসবমুখর পরিবেশ ফিকে হয়ে উঠেছে। গত বছরের চেয়ে আরো বেশী সতর্কতার মাঝে থেকেই কুড়িয়ে নিতে হবে যার যার ঈদের আনন্দ। সারা দেশের মতো আমার ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়ায় পালিত হবে ঈদুল আযহা। সবার মনে ঈদের খুশি ও আনন্দ দোলা লাগছে। তবে করোনার দিনে মানুষকে সতর্ক হয়েই চলতে হবে।

করোনার সবচেয়ে কার্যকর রক্ষাব্যূহ মাস্ক। সেটা পড়েই চলতে হবে পথে-ঘাটে। একে-অপরকে দেখে বুকে জড়িয়ে ধরা নয়, সামাজিক দূরত্ব মেনে নিরাপদ দূরত্ব থেকে চলবে একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়। গা ঘেঁষে পাশাপাশি বসে ঈদের আড্ডা দেওয়াও কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। স্বপ্ন দেখবে বেঁচে থাকলে সামনের ঈদটি যেনো করোনা মুক্ত আলোকোজ্জ্বল দিনে পালনের সুযোগ পাওয়া যায়। অদৃশ্য করোনার থাবা ভয়ংকর, প্রাণঘাতী । এখনও এর প্রতিকারে, প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর ওষুধ কিংবা টিকার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই সতর্কতাই একমাত্র অবলম্বন। সামাজিক দূরত্ব ও মাস্কই এখনও সবচেয়ে সেরা রক্ষা কৌশল। এ কথা ভুলে যাওয়া মানেই ঝুঁকি, বিপদের হাতছানি।

ঈদের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে উপভোগ করতে হবে। ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

সাংসদ আরো বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সমগ্র বিশ্ব। আমাদের পরিবার-পরিজন বন্ধু-বান্ধব পরিচিতজন অনেকেই আক্রান্ত। আমরা অনেকেই করোনাভাইরাসে আপনজনকে হারিয়েছি। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থেকে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। এমনই সময় পবিত্র ঈদ এসেছে আনন্দের বার্তা নিয়ে। তাই জনসমাগম এড়িয়ে সচেতনতার সঙ্গে ঘরে অবস্থান করেই ঈদ উদযাপন করতে হবে। পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দায়িত্বশীল আচরণ অনুশীলন এবং করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্য দিয়েই শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হোক পবিত্র ঈদুল আযহা।’

তিনি আরও বলেন, ঈদের মহিমান্বিত আহ্বানে শান্তিসুধায় ভরে উঠুক বিশ্বসমাজ। দেশপ্রেম আর মানবতাবোধের বহ্নিশিখায় জেগে উঠুক প্রতিটি মানব হৃদয়। আসুন, সমাজের ধনী-গরিব, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র, জাতি-গোষ্ঠী-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবাই পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহার খুশি ভাগাভাগি করে নিই। পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা করি— মানুষের জীবন থেকে দূরীভূত হোক সকল মহামারি, দুঃখ-জ্বরা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে অতীতে বাংলাদেশ যেভাবে সকল সংকট উত্তরণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে ঠিক একইভাবে করোনা সংকট জয় করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় নবউদ্যমে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। করোনাভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। আমাদের সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা জনগণকে সকল সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছে ।

তিনি বলেন, আল্লাহ বিপদে মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করেন। এসময় সকলকে অসীম ধৈর্য নিয়ে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল মনে একে অপরকে সাহায্য করে যেতে হবে। পাশাপাশি আমরা যেন ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করি এবং আল্লাহতায়ালার দরবারে বিশেষ দোয়া করি যেন এই সংক্রমণ থেকে আমরা সবাই দ্রুত মুক্তি পাই।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২০, ২০২১)