ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় রেল প্রজেক্টের সামগ্রী চুরির ঘটনায় বেরিয়ে আসলো গডফাদারদের নাম। রেল প্রজেক্টের মালামাল ও ট্রাকের ব্যাটারী চুরির ঘটনায় তিন যুবককে হাতেনাতে আটক করে তাদের ভাঙ্গা থানা পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। রবিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার ছিলাধরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার ভাঙ্গা থানায় একটি চুরি মামলায় সোম ও মঙ্গলবার দুই দিন ব্যাপী পুলিশ অভিযান চালিয়ে চুরি হওয়া মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের মুল হোতা ও তাদের গডফাদারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চোরদের মুল হোতা পুর্ব সদরদী বাস্তখোলা গ্রামের শাহআলম মাতুব্বর (৪৫), পৌরসভার আতাদী গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম (২২) ও ছিলাধরচর গ্রামের রবিউল শেখ (৩০) ও সুমন বিশ্বাস (৩০), চৌকিঘাটা গ্রামের জাফর শেখ (৪৮)। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি ভাঙ্গাসহ আশপাশের কয়েকটি থানা থেকে চোরাই অটো, নসিমন, ব্যাটারীসহ কাল ভার্ট ব্রিজের পরিত্যাক্ত রড ও ভাঙ্গায় চলমান রেললাইন প্রজেক্টের বিভিন্ন সামগ্রী চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ বিষয় ভাঙ্গা থানায় একাধিক চুরির মামলাও রুজু হয়। কিন্তু প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ভাঙ্গা উপজেলা ও পৌরসভার আশপাশে বিভিন্ন সময়ে দিনে ও রাতে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটে। গত ২৪ জুলাই শনিবার রাতে ভাঙ্গায় চলমান রেললাইনের প্রজেক্টের মালামাল ও রেললাইনে থাকা ট্রাকের ব্যাটারী চুরি করছিল একদল যুবক। পরে তিন যুবককে হাতেনাতে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে তাকে ভাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

স্থানীয় মাইক্রোবাস, মিনিবিাস মালিক সমিতি ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন, প্রায়ই রোডে থাকা গাড়ির ব্যাটারী চুরি হয়। থানায় একাধিবার জানিয়েছি কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। সারা ভাঙ্গায় ওদের চোরের সিন্ডিকেট রয়েছে। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে চোরেরা চুরি করেই যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জনপ্রতিনিধিরা বলেন, শাহআলমের বাবাও কয়েক বছর পূর্বে গরু চুরি করে পাবলিকের কাছে ধরা খেয়েছিলো। সে কিছুদিন আগেও ঢাকায় ঝাল মুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতো। সে এখন আ’লীগের স্থানীয় নেতা। স্থানীয় আ’লীগের প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় সে চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করে বর্তমানে কোটিপতি বনে গেছেন। শুধু চুরিই নয় শাহআলমের নেতৃত্বে একদল যুবক মাদক কারবারিসহ নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক রবিন জানান, চুরির ঘটনায় স্থানীয়রা হাতেনাতে তিন যুবক রিয়াজুল, রবিউল, সুমনকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। এদের বিরুদ্ধে এলাকায় চুরি ও মাদক সেবনসহআরও নানান অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভাঙ্গায় কয়েকটি চুরির ঘটনায় জড়িত বলে তিন যুবকের স্বীকারোক্তি পাওয়া গেছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে চোরের মুল হোতা শাহআলমসহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের কোর্টে প্রেরন করা হয়েছে। চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারসহ অন্যান্ন আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ডিকেসি/এএস/জুলাই ২৬, ২০২১)