শেখ সাদ বীন শরীফ, নড়াইল : সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর দেড় শতাধিক ভাতাভোগীরা নড়াইলের কালিয়ায় চরম দূর্ভোগ পৌঁহাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি বিকাশ হিসাব নম্বরে টাকা পাঠানোর নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর গত ছয় মাস যাবত ওই সমস্ত ভাতাভোগী টাকা পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। বিকাশ এজেন্ট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবহেলায় বিকাশ হিসাবের মোবাইল নম্বর ভূল এন্ট্রির কারণে প্রায় ১০০ জন ভাতাভোগীর টাকা অন্যের বিকাশ হিসাব নম্বরে চলে গেছে। আবার ৭১ জন ভাতাভোগীর বিকাশ হিসাব অকার্যকর হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর মোবাইল নম্বর ভূল এন্ট্রির কারণে তাদের ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেছে বলে ওইসব ভাতাভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।

উপজেলা সমাজসেবা অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর সভায় মোট ১ হাজার ৭৫০ জন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভাতাভোগী রয়েছেন। এর মধ্যে বয়স্ক ৫০০, বিধবা ৫০০,প্রতিবন্ধী ৭৫০ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। অতীতে ওইসব ভাতার টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করতেন। চলতি বছর বিকাশ ও ব্যাংক হিসাব নম্বরের মাধ্যমে ওইসব ভাতার টাকা পারিশোধের নিয়ম চালু করেন সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এরপর ভাতা ভোগীদের বিকাশে হিসাব খোলাসহ মোবাইল নম্বর সংগ্রহের জন্য উপজেলার ইউনিয়ন গুলোতে একজন করে বিকাশ এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। আর ওইসব এজেন্টরা ভাতা ভোগীদের নামে বিকাশে হিসাব খোলাসহ মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে জমা দেয়। কিন্তু এজেন্টরা ভাতাভোগীদের মোবাইল নম্বরটি সঠিক ভাবে এন্ট্রি না করায় প্রায় ১০০ জন ভাতাভোগীর টাকা অন্যের মোবাইল নম্বরে চলে গেছে।

শুধু তাই নয় ওই একই কারণে বয়স্ক ভাতার ৪২ জন, বিধবা ভাতার ১৩ জন ও প্রতিবন্ধী ভাতার ১৫ জনসহ ৭১ জন ভাতাভোগীর বিকাশ হিসাব অকার্যকর হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে ওইসব ভাতাভোগী গত ৬ মাস ধরে ভাতার টাকা পাননি বলে জানা গেছে।

উপজেলার কলাবাড়িয়া ইউপি ও গ্রামের বয়স্কভাতা ভোগী ওহাব খা, পৌরসভার রামনগর গ্রামের রিজিয়া বেগম ও বেন্দারচর গ্রামের সুফিয়া বেগম,বাঐশোনা ইউপির নিধিপুর গ্রামের সজীব খান ও সালামাবাদ ইউপির বাকা গ্রামের জামিলা বেগম অভিযোগ করে বলেন, নতুন নিয়মে সব কিছু ঠিক করেছেন। কিন্তু তাদের নামের পাশে ভূল মোবাইল নম্বর লেখা হওয়ায় গত ৬ মাসের ভাতার টাকা অন্যের মোবাইল নম্বরে চলে গেছে। তাই ঈদের আগে টাকা না দেয়ায় ঈদের আনন্দ থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, বিকাশ এজেন্টরা বিকাশে হিসাব খোলার সময় যে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেছে সে ভাবেই অফিসে এন্ট্রি করা হয়েছে। এজেন্টরা ভূল এন্ট্রি করায় অফিসের ভূল হয়েছে। তবে অভিযোগ পাওয়ার সাথে সেগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। আর অকার্যকর হিসাব নম্বর গুলো সঠিক ভাবে স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ করা হয়েছে। এরপর আগামীতে উপজেলায় ভাতাভোগীর আর কোন সমস্যা থাকবেনা।

(কেএস/এএস/জুলাই ২৭, ২০২১)