স্টাফ রিপোর্টার : নিরপরাধ মিনুকে নিজের বদলে অন্যায়ভাবে তিনবছরেরও বেশি সময় জেল খাটানোর দায়ে কুলসুমী আক্তার কুলসুমীসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা ওই মামলার অপর আসামি হলেন- মর্জিনা আক্তার।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দুপুরে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকাশ মাহমুদ ফরিদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে একই দিন ভোরে (বৃহস্পতিবার) নগরের বন্দর ও পতেঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুলসুমী ও মর্জিনা আক্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজায় নিজের বদলে কৌশলে অন্য নারীকে জেল খাটানোর দায়ে কুলসুমী আক্তার কুলসুমী নামে এক নারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় মর্জিনা আক্তার নামে কুলসুমীর এক সহযোগী নারীকেও আসামি করা করা হয়েছে। তাদের আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে গ্রেফতার করে পুলিশ। নতুন মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাদের ইতোমধ্যে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, কোহিনুর আক্তার নামে এক গার্মেন্টকর্মী হত্যা মামলায় কুলসুমী আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন আদালত। কিন্তু কুলসুমী কৌশলে নিজের বদলে মিনু নামে এক নারীকে আদালতে আত্মসমর্পণ করানোর মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন। তিন বছরের বেশি সময় নিরপরাধ মিনু জেল খাটার পর বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। আর এতে করে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ১৬ জুন মিনু কারাগার থেকে মুক্ত হন। তবে মুক্ত হওয়ার পর ২৮ জুন রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকায় তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জে একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাই মাসে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টকর্মী কোহিনুর আক্তারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন পোশাককর্মী কুলসুম আক্তার কুলসুমী। এরপর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।

মামলায় পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে কোহিনুরকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দিলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়। এর মধ্যে এক বছর তিন মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান কুলসুম।

মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ওই হত্যা মামলায় আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই সাজার পরোয়ানামূলে ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলি হয়ে মিনু কারাগারে যান।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৯, ২০২১)