মোঃ শান্ত (নারায়ণগঞ্জ সদর) : নারায়ণগঞ্জে মাদকের স্পষ্ট খ্যাত চানমারি বস্তি উচ্ছেদ করেছে জেলা পুলিশ। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে অবস্থিত বস্তিতে ছিল শহরের বৃহত্তর মাদকের আখড়া। 

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের নেতৃত্বে বেকু দিয়ে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।

এর আগে ৯ মে নারায়ণগঞ্জে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় চাঁনমারী বস্তি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের দেয়া আল্টিমেটামের মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে অনেকে স্বেচ্ছায় নিজেদের ঘর সরিয়ে নেয়। বৃহস্পতিবার বাকি ঘরগুলোও ভেকু দিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হয়।

চানমারি বস্তি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সময় দুপুর ১২ টায় সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।

প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, চানমারি বস্তিটি নারায়ণগঞ্জের অনেক পুরোনো বস্তি। এই বস্তিটির পাশেই নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনেক গুলো কার্যালয় রয়েছে যার মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা দায়রা জজ আদালত।

তিনি আরো বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হয়ে যোগদানের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জবাসীর দাবি ছিল। এই বস্তি থেকে মাদক নির্মূল করা ও বস্তিটি অপসারণ করা। এই বস্তিটি সম্পূর্ণভাবে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা ছিল। তাই এই অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদের জন্য জেলা পুলিশ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করি আমরা। এবং সকল শ্রেণী পেশার বিশেষ করে যারা মিডিয়াতে কাজ করেন। তারা এই বস্তিটি অপসারণের জন্য আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন।

নারায়ণগঞ্জে কোনো মাদকের স্পট কিংবা মাদক বিক্রেতার কোন স্থান হবে না। যদি কেউ মাদক নিয়ে কোনো ধরনের চিন্তা করে থাকেন তাহলে এখনি সচেতন হওয়ার কথা বলে জানিয়েছেন এসপি।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, এই চাঁদমারী বস্তি ছিল মাদকের স্পট। এখানে মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলতো। মাদক কারবারিদের গ্রেফতার, সাজা দেয়া, বন্দুকযুদ্ধের মতো ঘটনাও এখানে ঘটেছে। মাদক বিক্রেতারা এই এলাকাটিকে বেছে নিয়েছিল মাদকের হাট হিসেবে। আমরা এটিকে উচ্ছেদ করেছি এবং সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কে বলেছি তাদের জমিতে যেন দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। যেন কেউ আর এখানে অবৈধ স্থাপনা করতে না পারে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫ শতাধিক ঘরে ছিল এই বস্তিতে। প্রশাসনের স্বনিকটেই যুগের পর যুগ মাদকের ব্যবসা চলে আসছিল এই বস্তিতে।

স্থানীয়রা আরো বলেন, প্রশাসন অনেকবার অভিযান চালিয়ে ও বন্ধ করতে পারেনি এই মাদকের আখড়া। কিন্ত এবার প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপে চানমারি বস্তি উচ্ছেদ হওয়াতে এলাকাবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে।

এছাড়াও প্রশাসনের এরকম পদক্ষেপে নারায়ণগঞ্জের একটি বড় কলঙ্কের দাগ মুছবে বলে জানান তারা। তাই প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানায় এলাকাবাসী।

(এস/এসপি/জুলাই ২৯, ২০২১)