স্টাফ রিপোর্টার : শিগগির রফতানিখাতসহ সব ধরনের উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেছেন, ‘যতো শিগগির সম্ভব দেশের সব রফতানিখাতসহ সব ধরনের উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় রফতানিখাতের অর্ডারসমূহ বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সব প্রকার রফতানি বাণিজ্য। পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।’

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এই সংগঠনের সভাপতি শিগগির শিল্প কারখানা সচল করার পাশাপাশি রফতানি কার্যক্রমে নিয়োজিত সব শ্রমিক-কর্মচারীদের টিকা প্রদানের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

এফবিসিসিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এসব দাবি জানান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, বিজিএমইএ সভাপতি মো. ফারুক হাসান, ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিটিএমএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক প্রমুখ।

এতে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন- ‘কোভিডজনিত বিধিনিষেধের আওতায় সব প্রকার শিল্পকারখানা বন্ধ রাখায় অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে সাপ্লাই চেইন (সরবরাহ ব্যবস্থা) সম্পূর্ণভাবে বিকল হওয়ার উপক্রম। এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘আগামীতে পণ্য-সামগ্রী সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হবেন। পাশাপাশি রফতানিখাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মতো পরবর্তী রফতানি অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লাই দেয়া সম্ভব হবে না। এতে রফতানি অর্ডার বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। যদি উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়, তাহলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে।’

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকেও সচল রাখতে উৎপাদন ব্যবস্থাকে সচল রাখা জরুরি। বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে, শিল্পকারখানাকে বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানাসমূহ বন্ধ রাখায় উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব কারখানা পুনরায় চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় রফতানি ও উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনসমূহ ও চেম্বারসমূহ শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এফবিসিসিআইয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।’

(ওএস/এএস/জুলাই ২৯, ২০২১)