আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডেল্টা করোনাভাইরাসের অন্য ধরনগুলোর (ভ্যারিয়েন্ট) তুলনায় বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী, তা জানা গিয়েছিল আগেই। তবে করোনার নতুন এই ধরনটি পূর্বধারণার চেয়েও বেশি বিপজ্জনক, বলছে মার্কিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের একটি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের বরাতে এ তথ্য প্রথম প্রকাশ করে মার্কিন দৈনিক দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।

সিডিসির ওই প্রেজেন্টেশনে বলা হয়েছে, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট জলবসন্তের (চিকেন পক্স) মতো সংক্রামক হলেও তুলনামূলক বেশি প্রাণঘাতী। এছাড়া ডেল্টায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা করোনার অন্য ধরনে আক্রান্তদের তুলনায় বেশি দিন সংক্রামক থাকেন, অর্থাৎ তাদের মাধ্যমে অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি দিন থাকে।

সিডিসির তথ্যমতে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের রোগীরা ১৩ দিনের বদলে ১৮ দিন সংক্রামক অবস্থায় থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নির্দেশনা পরিবর্তন জরুরি হতে পারে।

প্রেজেন্টেশনে দেখানো হয়েছে, টিকা নেয়া ব্যক্তিরা না নেয়া ব্যক্তিদের তুলনায় করোনায় তিনগুণ কম আক্রান্ত হন। টিকাগ্রহীতাদের করোনায় মারা যাওয়ার আশঙ্কাও ১০ গুণ কম।

তবে টিকা নেয়ার পরেও কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তখন তিনিও টিকা না নেয়া ব্যক্তির সমান ভাইরাস বহন করেন। অর্থাৎ, সেসময় তারও মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক।

এছাড়া করোনা মহামারি মোকাবিলায় এখনো টিকাদান দারুণ কাজ করছে। সাম্প্রতিক এক ইসরায়েলি গবেষণা বলছে, টিকা নেয়া ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা করোনার আলফা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৯৭ শতাংশ সুরক্ষিত দেখা গেছে, তবে ডেল্টার বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা ৮৫ শতাংশ।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. চার্লস চিউ বলেন, এসব তথ্য পরিষ্কার বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদের কেন মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যনীতিতে ফিরে যাওয়া উচিত।

ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপস রিসার্চ ট্রানজিশনাল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. এরিক টপল বলেন, এই বছরের শুরুতে যদি আরও লোককে টিকা দেয়া যেত, তাহলে রোগীর সংখ্যা হয়তো বাড়ত না আর মাস্কে ফেরাও জরুরি হয়ে উঠত না। তিনি বলেন, যদি জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকা দেয়া হতো, তাহলে আমরা এমন বিব্রতকর অবস্থায় থাকতাম না। যখন অর্ধেকের বেশি মানুষকে (পুরোপুরি) টিকা দেয়া হয়নি, তখন আপনি অবশ্যই অরক্ষিত। ইউএসএ টুডে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ৩০, ২০২১)