টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরতে গণপরিবহন চালু হওয়ায় অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে উত্তরবঙ্গমুখী লেনে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। 

রবিবার (১ আগস্ট) ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্ত্বর থেকে টাঙ্গাইল শহরের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত যানজট স্থায়ী হয়। মাঝে মাঝে যানজট বেড়ে ঢাকার দিকে আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। আবার কমে তা ঘারিন্দা ও রাবনা বাইপাসে গিয়ে ঠেকে। তবে ধীরগতিতে যান চলাচল করায় যানজট স্থায়ী রূপ নেয়নি।

রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্ত্বর থেকে টাঙ্গাইল শহরের আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত সেতুমুখী গাড়ির দীর্ঘ সারি। পক্ষান্তরে ঢাকামুখী লেনে স্বাভাবিকের চেয়ে কম গাড়ি মহাসড়ক ফাঁকা পেয়ে বেপরোয়া গতিতে যাচ্ছে।

সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্ত্বর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেন না হওয়ায় উত্তরবঙ্গমুখী যানবাহনগুলো পুরো মহাসড়ক দখল করায় যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঢাকার দিকে জোকারচর, সল্লা, হাতিয়া, আনালিয়াবাড়ী, ধলাটেঙ্গর, চরভাবলা, পাথাইলকান্দি প্রভৃতি স্টেশনে এলোমেলোভাবে উত্তরবঙ্গমুখী গাড়ি জটলা সৃষ্টি করেছে।

এলেঙ্গা থেকে ঢাকার দিকে পুংলী, রসুলপুর, বিক্রমহাটি, রাবনা বাইপাস, কান্দিলা, ঘারিন্দা ও আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত উত্তরবঙ্গমুখী লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গণপরিবহন চালু হলেও খোলা ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকামুখী লেনে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। কাউকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।

উত্তরবঙ্গমুখী গাড়ির চালক সানোয়ার হোসেন, গোলাম কিবরিয়া, আহসানুল হক, গাড়ির সহকারী(হেলপার) আলতাফ, আলামিন, সালাহউদ্দিন জানান, আগেরদিন রাতে তারা পোশাকশ্রমিকদের নিয়ে চন্দ্রা, গাজীপুর, মাওনা, চক্রবর্তী, ইপিজেড, বাইপাইল, আশুলিয়া এলাকায় নামিয়ে দিয়ে খালি গাড়ি নিয়ে উত্তরাঞ্চলে ফিরছেন। সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে আবার ঢাকার দিকে আসবেন। তারা আরও জানান, পথে উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রী কম থাকায় খালি গাড়ি নিয়েই ফিরতে হচ্ছে।

উত্তরবঙ্গমুখী মাইক্রোবাসের যাত্রী আব্দুল হালিম, তার স্ত্রী রওশনারা জানান, তারা গাজীপুর থেকে চিকিৎসা নিতে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর যাচ্ছেন। মহাসড়কে টাঙ্গাইল অংশের আশেকপুর থেকে গাড়ি ধীরে চলছে, ঘারিন্দায় এসে যানজটে আটকা পড়েছিল। ঘারিন্দা থেকে রসুলপুর গ্যাসপাম্প পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে তাদের প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে।

যাত্রী বোঝাই পিকআপ চালক শহিদুল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে বাসা-বাড়ির মালামাল আনার জন্য গাজীপুর যাচ্ছেন। কিন্তু মহাসড়কের নানা স্টেশনে ঢাকাগামী যাত্রীরা অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি সকালের নাস্তা করার জন্য এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে থামলে এই সুযোগে যাত্রীরা যার যার মতো পিকআপে উঠে পড়েছে। তাদেরকে মাস্ক পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলেও কেউ শুনেনি।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত জানান, শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরতে গণপরিবহন চালু হওয়ার পর থেকে মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ রয়েছে। রাতে ঢাকামুখী লেনে চাপ ছিল, সকাল থেকে উত্তরবঙ্গমুখী লেনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে উত্তরবঙ্গমুখী গাড়িগুলোর অধিকাংশই যাত্রী শূন্য।

(আরকেপি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)