স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামী ৭ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত সাত দিনে উৎসবমুখর পরিবেশে দেশের অন্তত এক কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত সর্বত্র এ টিকাদান চলবে। এতে বয়স্ক মানুষকে অগ্রাধিকার দিয়ে তারপর অন্যান্যদের টিকা দেয়া হবে। অধিক সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে শুধুমাত্র ভোটার আইডি কার্ড বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও সহজ প্রক্রিয়ায় টিকা প্রদান করা হবে।

রবিবার (১ আগস্ট) সকালে মহাখালীর বিসিপিএস অডিটরিয়াম হলে প্রথমবর্ষ এমবিবিএস ক্লাস (২০২০-২০২১) শুরুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।

দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে নানা সমালোচনার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সৃষ্টির আগে এর ট্রিটমেন্টের বিষয়ে কারও কোনো ধারণা ছিল না। আমরা অতিদ্রুত শিক্ষা নিয়েছি। মাত্র একটি ল্যাব থেকে প্রায় সাড়ে ছয়শ ল্যাব করা হয়েছে। ১৭-১৮ হাজার শয্যা করা হয়েছে। আইসিইউ, এইচডিইউ সংখ্যা বৃদ্ধিসহ সারাদেশে ব্যাপকহারে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যখাত ভালো সেবা দিয়েছে বলেই দেশের অর্থনীতি এখনো বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতির থেকে এগিয়ে রয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী চলমান বিধিনিষেধের (লকডাউন) মধ্যে গার্মেন্টস খুলে দেয়ায় ফের সংক্রমণ বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন মন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে গার্মেন্টস খুলে দেয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তারা স্বাস্থ্যবিধি মানেনি। ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়বে। জীবনের জন্য জীবিকার দরকার হয়। সরকারকে সবকিছুই ভাবতে হয়।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা কোভিডকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মন্ত্রীর পাশে থেকে এই মহামারি মোকাবিলার কথা জানান।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে চলতি বছরের গত ২ এপ্রিল দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় মোট এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করে। এদের মধ্য থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং ৪৮ হাজার ৯৭৫ জন প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এবারের ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে ভর্তি পরীক্ষা কমিটি, ওভারসাইট কমিটি ও বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছিল। এ বছর সরকারি মেডিকেল কলেজসমূহের জন্য অতিরিক্ত ২৮২টি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. ইউসুফ ফকিরের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সেনাল।

এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ, বিসিপিএস-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)