স্টাফ রিপোর্টার : করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের করোনা কমিটির পদত্যাগ চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। রবিবার (১ আগস্ট) দুপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি করেন।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ সেলের আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘দেশে সরকার নেই। উচ্চ পর্যায়ে কমিটির মিটিং করে গার্মেন্টস খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলো। সেই পর্যায়ে সিনিয়র সেক্রেটারি বা সিনিয়র গর্ভামেন্ট অফিসিয়ালরা আছেন। তাদের মাথায় এটুকু ঢুকল না যে, আমরা যে খুলে দিচ্ছি এই লোকগুলো কিভাবে আসবে?’

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, ‘এই যে উদাসীনতা। কারণ মানুষ নিয়ে তারা তো ইন্টারেস্টেড (আগ্রহ) না, তারা ভোট করে ক্ষমতায় আসবে না। ভবিষ্যতে আসবে যে তারাও কোনো চিহ্ন নাই। সেজন্য জনগণ ইজ নট ফ্যাক্টর। আমি মনে করি এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি যে মিটিং করল তাদের এখনই পদত্যাগ করা উচিত।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা (সরকার) যেভাবে এই ধরনের মহামারিকে হেন্ডেল করছে তাদের আর এক মিনিট ক্ষমতায় থাকার অধিকার নাই। যারা মানুষের জানমাল রক্ষা করে না, তারা সরকার চালাতে পারে না।’

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে সারা দেশে দলের হেল্প সেন্টারে ওষুধ সামগ্রী প্রেরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে নরসিংদীর সভাপতি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মানিকগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ ও নারায়ণগঞ্জের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপুর হাতে ওষুধ সামগ্রী তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন সারাদেশে স্থাপিত দলের হেল্প সেন্টার থেকে মানুষের আহাজারির খবর পাচ্ছি। হসপিটালে ভর্তি হতে পারে না আমাদের কাছে আসে। আমরা তো হসপিটাল না, আমরা হেল্প সেন্টার। প্রতিদিন শত শত লোক আসছে যে, আমাদেরকে এখানে রাখেন।’

তিনি বলেন, ‘জেলা হসপিটালগুলোতে অক্সিজেন নেই। প্রতিটি জেলা সদরে অক্সিজেনের অভাব চলছে আপনারা যদি খোঁজ নেন পাবেন। তাই আমরা জনগণের দল হিসেবে যার যা আছে তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, এই প্রথম আমরা কেন্দ্র থেকে ওষুধ দিচ্ছি। এতদিন আমাদের দলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাদের নিজেদের পয়সা দিয়ে মানুষকে সেবা করেছে।’

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমাদের তৃণমূল কর্মীরা অমানবেতর জীবন-যাপন করছেন। না খেয়ে থাকছেন, মামলা মোকদ্দমায় জর্জরিত। এখনও বিএনপির করোনা হেল্প সেন্টার থেকে আমাদের দলের কর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, তাদের নাকি ওয়ারেন্ট আছে।’

টুকু জানান, এখন পর্যন্ত বিএনপি সারা দেশে প্রায় ৬০টা জেলায় বিএনপির পক্ষ থেকে ৬শ’ অক্সিজেন সিলিন্ডার হেল্প সেন্টারের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। ৯ হাজার ৫০০ জন করোনা রোগীকে ওষুধসহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ মাস্ক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রি সাধারণ জনগনের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। ২৫ হাজার ২৫০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে টেলিফোনের মাধ্যমে সার্বক্ষনিক খোঁজ-খবর রাখছে দলের সকল পর্য়ায়ের কর্মকর্তারা।

এই অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)