রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : অতিবৃষ্টিতে পানিবন্ধি হয়ে থাকা অন্তঃস্বত্বা কেয়ামনিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে ট্রলারেই সন্তান প্রসব করলেন। শনিবার দুপুর দু'টোর দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালি  খেয়োঘাট থেকে নওয়া বাঁকি নেওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। প্রসুতি ও নবজাতক বর্তমানে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবাদ চণ্ডিপুর গ্রামের ইমরান হোসেন জানান, তার সন্তানসম্ভা স্ত্রী কেয়ামনির শুক্রবার রাতে প্রসব বেদনা ওঠে। এ সময় মুসলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। পদ্মপুকুর দ্বীপ ইউনিয়ন হওয়ায় কর্দমাক্ত রাস্তা জলাবদ্ধ বাড়ি থেকে কেয়ামনিকে নিয়ে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব ছিল না। কেয়ামনি প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করায় ডাকা হয় গ্রাম ডাক্তার ও ধাই মাকে। শনিবার তার সন্তান প্রসবের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তারা। একপর্যায়ে দোলনায় করে কেয়ামনিকে পাতাখালি খেয়াঘাটে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ট্রলারে করে খোরপেটুয়া নদীপথে নওয়াবাঁকি খেয়াঘাটে নেওয়ার সময় কেয়ামনি(২০) সন্তান প্রসব করে। পরে তাকে ও নবজাতককে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

একদিকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত, অন্যদিকে গ্রামীণ অবকাঠামোর অনুন্নয়ন কিংবা কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকা জনপদ পদ্মপুকুরে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উটেছে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ১৪ কিলোমিটার দূরে শ্যামনগর সদরে যেতে হয় চিকিৎসা নিতে। মাঝেমধ্যেই নদী পথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার আগেই ট্রলারে সন্তান জন্ম দেন অনেক গর্ভবতী মা, আবার জীবনহানির ঘটনাও ঘটে প্রসব যন্ত্রণায় কাতর অনেক মায়ের। অনেকে বাড়িতে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে রক্তক্ষরণেও মারা যায়, কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগ থাকে না।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)