রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পৃথক ঘটনায় এক বাক প্রতিবন্ধি ও ষষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যথাক্রমে গত বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামে ও শনিবার দুপুরে শ্রীউলা ইউনয়নের মাড়িয়ালা মোড়ে এসব ঘটনা ঘটে। ওই দু’ কিশোরীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আশাশুনির গোদাড়া গ্রামের এক বাকপ্রতিবন্ধি কিশোরীর (১৪) মা জানান, তার মেয়ে একই গ্রামে মামার নতুন বউ দেখার জন্য বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। লতাখালি গ্রামের আবু হানিফের ছেলে সুমন পথিমধ্যে অলিদের মুদি দোকানের পাশ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ইকরামুলের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যেয়ে ধর্ষণ করে। দু’ ঘণ্টা পর খুঁজতে বেরিয়ে তাকে পাওয়ার পর মেয়ে ইশারায় তাকে জানালে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

শুক্রবার সকালেমেয়েকে নিয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরপরই মেয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ি দুপুরে সুমনকে আটক করে পুলিশ। এরপরপরই তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে মেয়েকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে তারা হাসপাতালে থেকে জানতে পেরেছেন যে পুলিশ সুমনকে ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি থানায় কোন মামলাও হয়নি।

তবে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পর্যায়ের এক বড় মাপের জনপ্রতিনিধির পুলিশে প্রভাব খাটিয়ে সুমনকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে।

অপরদিকে আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হিজলিয়া গ্রামের এক গৃহবধু জানান, তার মেয়ে পার্শ্ববর্তী একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। প্রতিদিনের ন্যয় সে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী আব্দুল্লাহ স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে বৃষ্টি আসায় কলিমাখালি খোলারাটি গ্রামের মোস্তফার ছেলে মাড়িয়ালা মোড়ের মুদি ব্যবসায়ি মোস্তাফিজুর রহমানের দোকনের বারান্দায় আশ্রয় নেয়।

এ সময় মোস্তাফিজুর তাকে দোকানের মধ্যে ডেকে নিয়ে শার্টার ফেলে দিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানার পর ননদ ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে করে থানায় নিয়ে যান। সেখানে পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন তাদেরকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থানায় নেই বলে রোববার আসতে বলেন। মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে তাকে রোববার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর ও পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মাহাফুজুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম এ প্রতিবেদককে রোববার বিকেলে মোবাইল ফোনে বলেন, প্রতিবন্ধি মেয়েটির ধর্ষণের কথা জেনে তার কথামত সুমনকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে মেয়েটি কথা সঠিক বলতে না পারায় জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় মেয়েটির পক্ষ থেকে কোন মামলা দেওয়া হয়নি দাবি করে বলেন, মোবাইল ফোন যাঁচাই করে ধর্ষককে সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

সহকারি উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন বলেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা না থাকায় ধর্ষিতার কোন অভিযোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই তাদেরকে পরদিন আসতে বলা হয়।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)