আবু নাসের হুসাইন, ফরিদপুর : ফরিদপুরে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে শুরু থেকেই তৎপর রয়েছে জেলা পুলিশ। সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করায় প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার বিকাল ৪টা থেকে রবিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মোট ৩৫ জনকে ৩১ হাজার ২০০ (একত্রিশ হাজার দুইশত) টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর ক্রমবর্ধিষ্ণু সংক্রমন প্রতিরোধে দেশের অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে ২৩ জুলাই/২০২১ সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট/২০২১ রাত ১২টা পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা বিধি-নিষেধ আরোপ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুর জেলা পুলিশের উদ্যেগে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন প্রতিরোধে কঠোর বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রেখে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানকল্পে বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কঠোর বিধি-নিষেধ পালনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফরিদপুর জেলা সদরে কোতয়ালী থানা ও অন্যান্য অটটি থানা এলাকায় মোট ১৬টি চেকপোস্ট ও ২৯ টি মোবাইল টিম গঠনের মাধ্যমে নিরলসভাবে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ফরিদপুর জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি এবং বাংলাদেশ আনসারের সদস্যবৃন্দ মোতায়েন রয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৬টা থেকে পালাক্রমে জেলা পুলিশ বিভিন্ন পোস্টে মোতায়েন হয়ে কাজ করছে। মোবাইল টিমে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমন রোধকল্পে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিংসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে।

ফরিদপুর জেলায় সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করায় গতকাল শনিবার বিকাল ৪টা থেকে রবিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত, গত ২৪ ঘন্টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কোতয়ালী থানা এলাকায় ২১ জন ব্যক্তিকে ১৮ হাজার টাকা, সালথা থানা এলাকায় চারজনকে ৫হাজার টাকা, নগরকান্দা থানা এলাকায় ১০ জনকে ৮হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩৫ জনকে ৩১ হাজার ২০০ (একত্রিশ হাজার দুইশত) টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও ফরিদপুর জেলা পুলিশ করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের আইসোলেশন নিশ্চিতকল্পে প্রতিটি থানায় দুইজন করে পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত টিম প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি (পিপিই) পরিধান করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দূর থেকে হেলার দিয়ে ঘোষণা করে সর্তকতামূলক প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। সাথে সাথে আশেপাশের বাড়ির মানুষজন যেন সচেতন থাকে সে বিষয়েও প্রচারণা চালাচ্ছেন এই করোনা টিম। আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হচ্ছে যেন এলাকার মানুষ নিজেরাই নিরাপদ দূরত্বে থাকতে পারে।

কোভিড-১৯ এর সংক্রমন প্রতিরোধে সরকার কর্তৃক আরোপিত বিধি-নিষেধ মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। অতি জরুরী প্রয়োজনে যারা বের হবেন তাদেরকে পরিচয়পত্র, জরুরী প্রয়োজনের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে বের হওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও কাগজপত্রাদি (যেমন: হেলমেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন পেপার ইত্যাদি) সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

(এন/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)