আবু নাসের হুসাইন, সালথা (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের সালথায় আমন ধান রোপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শুরু থেকেই যদি ক্ষতিকর পোকা নিয়ন্ত্রন করা যায়, তবে সহজেই অধিক ফলন ঘরে তোলা যাবে। পোকা দমনের একটি পরিবেশ বান্ধব ও কার্যকর পদ্ধতির নাম পার্চিং।

উপজেলা কৃষি অফিসার জীবাংশু দাস বলেন, পার্চিং মানে ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেয়া। ফসলের জমিতে ডাল, কঞ্চি, বাঁশের খুঁটি এগুলো পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে পাখি ক্ষতিকারক পোকার মথ, বাচ্চা, ডিম খেয়ে পোকা দমন করে। পোকা দমনের এ পদ্ধতিকে পার্চিং বলা হয়। পার্চিং দুই প্রকারের। ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং। মরা ডালপালা পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং এবং ধইঞ্চা, অড়হর এসব জীবন্ত জমিতে পুঁতে দিলে তা হবে লাইভ পার্চিং।

পার্চিং কেন করব। পার্চিংয়ে বসে দোল খেতে খেতে পাখিরা মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, চুঙ্গি পোকা, ধানের স্কিপা পোকার মথ, শিষ কাটা লেদা পোকা, সবুজ শুঁড় লেদা পোকা, ঘাস ফড়িং, লম্বা শুঁড় ঘাস ফড়িং, উড়চুঙ্গা ধরে খায়। পোকা ও পোকার ডিম খাওয়ার ফলে ফসলের ক্ষেতে পোকার সংখ্যা থাকে না কিংবা খুব কম থাকে। কম খরচে বা বিনা খরচে পোকা দমন সম্ভব। পরিবেশবান্ধব অর্থাৎ বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভার থেকে পরিবেশ রক্ষা করে। পাখির মল জমিতে জৈব সার যুক্ত করে।

কতটি ডাল পুঁততে হবে- এই প্রশ্নে কৃষি অফিসার আরো বলেন, বিঘা (৩৩ শতক) প্রতি ৬-৮ টি ডাল পুঁততে হবে। যাতে ফিঙ্গে, শালিক, বুলবুলি, শ্যামা, দোয়েল, সাত ভায়রা- এসব পাখি পার্চিংয়ে বসে পোকা ধরে খায়।

এক গবেষণায় জানা যায়, একটি ফিঙে পাখি সারা দিনে কমপক্ষে ৩০টি করে মাজরা পোকার মথ, ডিম ও পুত্তলি খেয়ে থাকে। একটি পাখির দ্বারা প্রতিমাসে হাজার হাজার পোকা ধ্বংস করা সম্ভব হয়। ধান পাকা শুরু হলে পার্চিংয়ে ব্যবহৃত ডালগুলো সরিয়ে নিতে হবে যাতে ডালে বসে পাখি ধান খেতে না পারে।

(এন/এসপি/আগস্ট ১৬, ২০২১)