অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ইজিবাইক আটক ও টাকা আদায়ের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) ঝিনাইদহ বাস মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের দুই সদস্য আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বাস শ্রমিকরা। 

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে এ সড়ক অবোরধ করা হয়। এতে ঝিনাইদহের সাথে মাগুরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়াসহ সারা দেশের যান চলাচল প্রায় দুইঘন্টা বন্ধ থাকে। ফলে যাত্রী সাধারণরা পড়ে চরম দুর্ভোগে। প্রায় দুইঘন্টা সড়ক অবরোধের পর জেলা প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, জলো শহরের বিভিন্ন প্রবেশ মুখে বাস মালিক সমিতি ও বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তল্লাশী বসিয়ে ইজিবাইক আটক করে। আটককৃত ইজিবাইক ধরে মালিক সমিতির অফিসে এনে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এমন অভিযোগ করেন গ্রাম থেকে আসা ইজিবাইক চালকেরা। একাধিক ইজিবাইক চালক অভিযোগ করেন তারা রোগী নিয়ে বা গ্রাম থেকে বৃদ্ধ মানুষদের টিকা দিতে ঝিনাইদহ শহরে প্রবেশের সময় তাদের ইজিবাইক আটক করে টাকা আদায় করা হয়। প্রতিদিনি এভাবে হাজার হাজার টাকা ওঠানো হলেও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না বলে অভিযোগ। সাবেক পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান এ ধরণের চাঁদাবাজী ও শ্রমিক বিট সব বন্ধ করে দিলেও তা আবার চালু হয়েছে। জেলা ট্রাফিক পুলিশ এর ধৈতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

ট্রাফিক পরিদর্শক সালাউদ্দীন এ বিষয়ে জানান, একমাত্র পুলিশ ছাড়া কারো যানবাহন আটক করার রাইট নাই। যারা করেন তারা অবৈধ ভাবে করেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার আসলে কি ঘটনা ঘটেছিল তা সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানান, ইজিবাইক আটকের ক্ষমতা শ্রমিকদের নেই। যদি আইনশৃংখলা কমিটির রেজুলেশন থাকে তবেই বৈধতা পাবে। তার আগে ইজিবাইক আটক বা টাকা আদায় করা যাবে না।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক একটি সমাধান দিয়েছেন। কোন সংগঠন বিট বসিয়ে যানবাহন আটক করতে পারবে না।

ঝিনাইদহ বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওয়ালিয়ার রহামান জানান, শহরের চুয়াডাঙ্গা বাস স্টান্ডে ইজি বাইকে যাত্রী উঠানো নিয়ে ইজি বাইক ও বাস শ্রমিকের মধ্যে বাকবিতান্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বাস মালিক সমিতির নেতা শান্তি কুমার দাস ও শ্রমিক নেতা ইমরান হোসেনকে আটক করে। আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরের আরাপপুর, টার্মিনাল, বাইপাস ও চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেয়। পরে শ্রমিকদের পুলিশ ছেড়ে দিলে দুই ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, শ্রমিকদের সাথে পুলিশের একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আলোচনার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।

(একে/এসপি/আগস্ট ২৬, ২০২১)