এমদাদুল হক স্বপন, ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে সোয়া ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত লঞ্চ টার্মিনালের গ্যাং সিঁড়ি তৈরীতে চেক প্লেট সংকটের কারনে পল্টুন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। করোনায় চেক প্লেটের সংকট থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবি। পন্টুনের কাজ ৯০ ভাগ শেষ করেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গ্যাং সিঁড়ি স্থাপন করতে পারছেনা পাঁচ মাস ধরে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।  

গ্যাং সিড়ির কাজ অসমাপ্ত থাকায় ঢাকা-ঝালকাঠি নৌ রুটে চলাচল করা দুটি লঞ্চের কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের স্টিমার কোম্পানীর পন্টুনে নামিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু সেখানে স্টিমার থাকলে লঞ্চ চালকরা বাধ্য হয়ে নবনির্মিত লঞ্চ টার্মিনালেই যাত্রী নামাচ্ছে। এছাড়া লঞ্চ থেকে ব্যবসায়ীদের মালামাল নির্মানাধীন টার্মিনালে নামিয়ে দেয়ায় যাত্রী, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি নিয়ে নামতে হচ্ছে এবং মালামাল নামাতে হচ্ছে। এদিকে অতিরিক্ত তেল খরচ করে দুটি পল্টুনে ঘাট দেয়ার কারনে পল্টুন নির্মান কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা-ঝালকাঠি রুটে যে কোন সময় বন্ধ করা হতে পারে লঞ্চ চলাচল।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে বিভিন্ন নদী বন্দরে স্থাপনের জন্য প্রায় ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ ৪৫ টি বিশেষ ধরনের টার্মিনাল পন্টুন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রতিটি পল্টুন নির্মাণে ব্যায় ধরা হয় প্রায় সোয় ২ কোটি টাকা। ওই বছরের ২২ আগস্ট আনন্দ শিপইয়ার্ড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে বিআইডব্লিউটিএ চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে। প্রতিটি পন্টুনের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট, প্রস্থ ৩২ ফুট এবং গভীরতা ধরা হয়েছে ৭.৫ ফুট। ৪৫টি পন্টুনের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত রমজানে ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে পন্টুন নির্মাণের কাজ শুরু করে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু নির্মাণ কাজের ৯০ ভাগ শেষ করেও গত মার্চ থেকে গ্যাং সিঁড়ি নির্মিাণ না করেই ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা-ঝালকাঠি রুটের ফাহান-৭ লঞ্চের টিকিট মাস্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, গ্যাং সিঁড়ি না থাকায় যাত্রীদের ভোগন্তির শেষ নেই। কিছুদিন আগে একজন যাত্রী সিড়ি পাড় হতে গিয়ে পড়ে যায়। লঞ্চ দুই পন্টুনে ঘাট দেয়ায় আমাদের জ্বালানী খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই গ্যাং সিড়ি চালু না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লঞ্চ বন্ধ রাখতে হতে পারে। লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন গাজী বলেন, করোনার মধ্যে ৩২ লাখ টাকায় ইজারা নিয়ে লোকাসানে আছি। গ্যাং সিঁড়ির অভাবে যাত্রী কমে যাওয়া আরও লোকনসানে পড়তে হবে।

ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ঝালকাঠি পন্টুনের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি সাজিদ স্বপন বলেন, গ্যাং সিড়ি নির্মাণের জন্য চেক প্লেটের দরকার হয়। করোনায় দেশে চেক প্লেটের সংকট থাকায় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। মালামাল হাতে পেলেই দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ এর যুগ্ম পরিচালক আজগর আলী বলেন, ঠিাকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। আমাদের প্রকৌশলীরাও পন্টুন পরিদর্শন করেছে। আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

(এস/এসপি/আগস্ট ২৬, ২০২১)