নূরুল আমিন খোকন, ফেনী : সাম্প্রতিক সময়ে ফেনীতে বেড়ে যাওয়া নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন এবং সহিংসতার প্রতিবাদের ৫ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সকালে ফেনীতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও স্মারক লিপি প্রদানের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে ।

ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ফেনীর সচেতন নাগরিক সমাজ এর ব্যানারে ১৪ দফা দাবির সমর্থনে কর্মসূচির সমন্বয়ক বখতেয়ার মুন্নার সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন, ফেনীর সকল জনপ্রতিনিধির পক্ষে ফেনী সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ কে শহীদ উল্লাহ্ খোন্দকার, জাতীয় মহিলা সংস্থার ফেনী জেলা শাখা চেয়ারম্যান খাদিজা খানম রুনা, ফেনী জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোসাদ্দেক আলী, চাড়িপুর হাফেজিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা কাউসার হামিদ, ফেনী প্রেসক্লাব সভাপতি শওকত মাহমুদ, ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এনামুল হক পাটোয়ারি, ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ফেনী জেলা শাখা সভাপতি সমর দেব নাথ ও মানবিক নেত্রী মঞ্জিলা মিমি।

১৪ দফা দাবিতে ফেনীতে নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোববার ফেনীর সকল জনপ্রতিনিধির পক্ষে ফেনী-২ আসনে সংসদ সদস্য ও গণ মানুষের নেতা জনাব নিজাম উদ্দিন হাজারির পূর্ন সমর্থনসহ ফেনীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানবিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়িক ও সাংবাদিকদের প্রায় অর্ধ শতাধিক সংগঠনের নেতা কর্মীসহ সহাস্রাধিক সাধারণ মানুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

বক্তারা বলেন দেশ আজ অভূতপূর্ব উন্নয়নের মহাসড়কে চলমান। সারাদেশে অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন ও প্রযুক্তিতে অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রসরমান। ফেনীও আজ সারাদেশের ন্যায় উন্নয়নের উজ্জল সাক্ষ্য দিচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ফেনীতে নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন ও সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগ জনক হারে বেড়ে চলেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীরা নিবাপদ নয়। এ বিষয়ে ফেনীবাসি আজ চরমভাবে উদ্বিগ্ন ও আতংক গ্রস্থ।

ফেনীতে সাম্প্রতিক সময়ে সোনাগাজীর চর লক্ষীগঞ্জ হাফেজ সামছুল হক (রা:) মাদ্রাসায় শিক্ষক কর্তৃক দশ বছরের মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত বলৎকার ও হত্যার শিকার, বগাদানার পাইকপাড়ায় গৃহ শিক্ষকের সাথে ছাত্রীর প্রেমের ঘটনা নিয়ে লংকা কান্ড, দাগনভূঞায় বারাহি গোবিন্দ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্তৃক শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণ, ফুলগাজীতে এক গৃহবধূ ও তার শিশূ কন্যাকে জীবন্ত সাপ গলায় পেঁচিয়ে অপচিৎিসা ও অমানুষিক নির্যাতনসহ চলমান ঘটনাগুলো ফেনীর সাধারণ মানুষকে আতংকিত ও ভাবিয়ে তুলেছে। দাগনভূঞায় বারাহি গোবিন্দ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই ধর্ষক শিক্ষক এক মাসের মাথায় জামিনে ছাড়া পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ গরীব পরিবারটিকে সমঝোতার জন্য চাপ ও ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করছে। বিষয়টি ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য জনাব নিজাম উদ্দিন হাজারীর নজরে আসায় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটির মানবিক ও আইনি সহায়তায় পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটা পাশে দাঁড়ানোর একটি ঘটনা মাত্র। আমরা বলতে চাই-এমন অসংখ্য ধর্ষক ও নারী ও শিশু নির্যাতনকারি জামিন পেয়ে ভিকটিম ও সাক্ষীদের হুমকি প্রদানের ঘটনাও ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর ভোগান্তি. হয়রানী, হুমকিতে পাশে কেউ নেই। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ফেনী জেলায় ২৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নারী ও শিশু নির্যাতনের ৫৬টি ঘটনা আলোচনায় এসেছে। ফেনীর সুনাম রক্ষায় এখনই গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

দুপুরে নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন ও সহিংসতা রোধের ১৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা শেষে ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

(এনকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২১)