আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অংশীদারত্বমূলক বাণিজ্য চুক্তি সিপিটিপিপি’তে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে চীন। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন্তাও নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রী ও সিপিটিপিপির বর্তমান ডিপোজিটরি ড্যামিয়েন ও’কনরের কাছে জোটে যোগদানের জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের খবর অনুসারে, বৈশ্বিক বাণিজ্যে নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা পাকাপোক্ত করা ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপবৃদ্ধির লক্ষ্যে সিপিটিপিপি’তে যোগ দিতে চায় চীন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়া নীতির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগেই ২০১৫ সালে ১২টি দেশের মধ্যে সই হয় বহুল আলোচিত ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি। তবে ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছর পরেই এটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে টিপিপি। তবে বাকি দেশগুলোর আগ্রহে কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা সিপিটিপিপি নামে কোনোরকমে টিকে থাকে চুক্তিটি।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এ চুক্তিতে সই করা বাকি ১১টি দেশ হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রুনেই, কানাডা, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম।

চুক্তি অনুসারে সিপিটিপিপি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধার কথা উল্লেখ রয়েছে। চীন যুক্ত হওয়ার পর সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সৃদৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে, গত বছর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এক ডজনের বেশি দেশ নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব (আরসিইপি)-তে যোগ দিয়েছে চীন। বর্তমানে এশিয়া অঞ্চলের এ দু’টি বৃহৎ অর্থনৈতিক চুক্তির একটিতেও নেই যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এ অঞ্চলে চীনের একচ্ছত্র প্রভাব আরও বাড়তে চলেছে; বিপরীতে, সুযোগ কমছে যুক্তরাষ্ট্রের।

অবশ্য এসব জোটের একাধিক সদস্য চীনবিরোধী অন্য জোটেরও অংশীদার। যেমন, যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের পাশাপাশি কোয়াড জোটের সদস্য হিসেবে রয়েছে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া, যারা উভয়ই আরসিইপি ও সিপিটিপিপি’তে স্বাক্ষরকারী। আর গত বুধবারই (১৫ সেপ্টেম্বর) অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য এগুলো প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি, তবে তাতে অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১)