নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের জুগির পুকুর পুনঃখনন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে কমিটির লোকজনের মাঝে বিরোধ চরম আকার ধারন করেছে। একদিকে প্রকল্পের টাকা হরিলুট, অপরদিকে স্থানীয় কিছু মানুষ পুকুরের মাটি লুটপাটে মহোৎসব শুরু করেছে। সরকারি প্রকল্পের মাটি প্রকল্প কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহায়তায় পুকুরের চারিপাশের লোকজন শ্রমিক লাগিয়ে দিনে-রাতে পুকুরের মাটি কেটে ভরাট করছে তাদের নিজেদের জমি ও বাড়ি ভিটা। ব্যাক্তিমালিকানার উদ্যোগে পুকুর থেকে মাটি কাটা হলেও খরচ দেখানো হচ্ছে সরকারি প্রকল্পের টাকায়। এ ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে ওই পুকুর মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে এফসিডিআই প্রকল্পের দ্বারা পুনঃখননের জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। পুকুরটি শুকানোর পর পুকুরের চারিপাশের বাসিন্দা ও জমির মালিকরা নিজ উদ্যোগে এবং শ্রমিক খাটিয়ে পুকুরের মাটে কেটে তাদের নিজেদের জমি ভরাট করছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্প কমিটির দলনেতা ইনছের আলী পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছেন। পুকুর থেকে মাটি কাটছে অন্তত ৪০/৫০ শ্রমিক। কথা হলো শ্রমিক সরদার নাহিদের সঙ্গে। তার অধীনে ৩০ জন শ্রমিক মাটি কাটছে এলাকার মৃত কফিল উদ্দিনের পুত্র দেলোয়ার ও দানেশের জমি ভরাট করার জন্য। তারা দিনমজুরি হিসেবে খাটছেনা। পুকুর থেকে মাটি কেটে সংলগ্ন ওই জমি ভরাট করছে তারা ৪০ হাজার টাকা চুক্তিতে। শ্রমিক নজরুলও একই কথা বললেন। কমিটির সভাপতি ইনছের জানান, পুকুরের চারিপাশের লোকজন মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে মন্দ কি? পুকুরের গভীরতা বাড়ছে।
এব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহ জানান, সরকারি প্রকল্প থেকে কোন সাধারণ মানুষ মাটি কেটে নিয়ে যেতে পারেনা। তবে পুকুর পাড়ের বাসিন্দারা তাদের প্রয়োজনে কিছু মাটি কাটতেই পারে। সরকারি প্রকল্পে কোন মাটি কাটা হয়নি, মাটি কেটে পুকুরের চারিপাশ ভরাট করছে পুকুর পাড়ের বাসিন্দারা তাদের নিজের জমিতে, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, প্রকল্পের কাজ বেশ কিছুটা হয়েছে। স্থানীয় শ্রমিকরা জানায়, থানা মৎস্য কর্মকর্তা স্থানীয় লোকজনদের পুকুর থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাবার অনুমতি দিয়েছেন।

এছাড়া পুকুর খননে অনিয়মের যিনি অভিযোগ করেছেন, সেই আব্দুল হামিদের কাছে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছেন। এব্যাপারে সদর থানা মৎস্য কর্মকর্তা শামছুল আলম শাহ্ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এদিকে কমিটির উপদলনেতা সিরাজুলের পিতা ইয়াদআলী জানান, প্রকল্পের লাভের টাকা দিয়ে স্থানীয় ঈদগাহ্ ও মসজিদের উন্নয়ন কাজ শুরু করা হয়েছে। এব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাছিনা আখতার জানান, প্রকল্পের পুকুরের মাটি কেটে পুকুরের পাড় বাঁধার কথা। কোন ব্যাক্তিমালিকানার জমি ভরাট করার জন্য নয়। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান।
(বিএম/এএস/এপ্রিল ২৩, ২০১৪)