সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মেসার্স মহিমা এন্টারপ্রাইজ নামক এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির নিকট থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার টেন্ডারের দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া উঠেছে।

২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরের দিকে সালুয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ খননে কুলিয়ারচর অংশের বালি/মাটি ইজারা নিয়ে টেন্ডারের দরপত্র জমা দেওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী’র অফিসে এ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে মেসার্স মহিমা এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার সালুয়া ইউনিয়ন ব্রহ্মপুত্র নদ খননে বালি/মাটির টেন্ডারের দরপত্র আহবান করে উপজেলা নির্বাহী অফিস। টেন্ডারে বালি/ মটির ইজারা মূল্য ধরা হয়েছে ৩৯ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭৮ টাকা। দুই দফায় আশানুরূপ দরপত্র পাননি উপজেলা নির্বাহী অফিস। পরে পুনরায় তৃতীয় বারের মত টেন্ডার আহ্বান করা হলে মেসার্স রতন এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স মহিমা এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স চাঁদনী এন্টারপ্রাইজ সিডিউল ক্রয় করে। তিনটি সিডিউলের মধ্যে মেসার্স রতন এন্টারপ্রাইজের একটি সিডিউল জমা পড়ে এবং মেসার্স মহিমা এন্টারপ্রাইজ সিডিউল জমা দিতে গেলে তা ছিনতাই হয়ে যায়। অন্য দিকে মেসার্স চাঁদনী এন্টারপ্রাইজ সিডিউল জমা দিতে আসেনি।

দরপত্র আহ্বানের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ছিল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ও সময়। নির্ধারিত সময়ের আগেই সিডিউল জমা দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে যেতে চাইলে মেসার্স মহিমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. রেনু মিয়াকে বাধা দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে দরপত্র বাক্সে দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া’র পিএস মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন মেসার্স মহিমা এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি হিসেবে দরপত্র জমা দিতে গেলে তার কাছ থেকে দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ছিনতাইয়ের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

প্রতিপক্ষের লোকজন এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে দাবী করে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ্য করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করে ছিনতাইকারীদের বিচারের দাবী জানান।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া বলেন, মহিমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. রেনু মিয়া টেন্ডারের দরপত্র জমা দিতে গেলে তাকে বাধা দেওয়ার পর তিনি আমার বাসায় আসেন। পরে আমার পিএস মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনকে দিয়ে টেন্ডারের দরপত্র জমা দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে পাঠালে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১)