স্টাফ রিপোর্টার : মানুষ ছাড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই বলে জানিয়েছেন কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমানভাবে বসবাস করবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে হলে কবি সাহিত্যিকদের কাজ আছে অনেক। তাই আমাদের কবি-সাহিত্যিক-লেখকদের সমানভাবে লিখবার স্বাধীনতা দিতে হবে।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

আনিসুল হক বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পর আজকে আমাদের সাম্প্রদায়িক হামলা দেখতে হচ্ছে। এটা খুবই কষ্টের বিষয়। আমরা এখনই চাই সমস্ত বাংলাদেশের মানুষ এক হয়ে দাঙ্গাবাজ-হামলাবাজ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো। আমরা বাংলাদেশের লেখকসমাজ, মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই, আসুন মানবিকতা নিয়ে ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’ এই বাণীতে আবার এক হই। আবার আমরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনি। এখানে ধর্মের নামে কোনো হানাহানি হবে না, কোনো বৈষম্য থাকবে না। ধনী-গরিবে কোনো বৈষম্য থাকবে না। মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পাশাপাশি বসবাস করবো। রাষ্ট্র আমাদেরকে রক্ষা করবে, কিন্তু কোনো ধর্মের প্রতি পক্ষপাত করবে না।

‘আমরা সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সুন্দর সম্প্রীতির দেশ চাই। যে ঘটনা ঘটেছে এর জন্য আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি করে দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বাংলাদেশের সমস্ত সাধারণ মানুষকে, সুশীল সমাজকে আমাদের কৃষক-শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠনসহ, সামাজিক সংগঠনগুলোকে জায়গা দিতে হবে।’

তিনি বলেন, আজকে আমি দেখছি, পুলিশ দিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা ঠেকানোর বা পূজামণ্ডপ রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে না কেন, এই প্রশ্ন উঠছে। বাস্তবে, মানুষ ছাড়া মানুষের পাশে কেউ দাঁড়ানোর নেই। মানুষকে আনতে হলে জায়গা দিতে হবে, কথা বলবার স্বাধীনতা দিতে হবে, বাক স্বাধীনতা দিতে হবে। মুক্ত হওয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে, মুক্তভাবে গাইবার স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাদের করণীয় আছে অনেক, আমরা পরাজিত হবো না, করণীয়গুলো করে যাব। আমাদেরকে চুপ করে থাকলে হবে না মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে হবে।

আনিসুল হক আরও বলেন, আমরা শেষ হয়ে গেছি। তবে ছোট্ট ধূলিকণা থেকেই আবার স্রোতের মতো জেগে উঠবো, আবার সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

বিক্ষোভ সমাবেশে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক, সাহিত্যিক, কবি ও সুশীল সমাজের সদস্যরা বক্তব্য দেন।
(ওএস/এএস/অক্টোবর ১৯, ২০২১)