এস এ সাদিক, মেহেরপুর : বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ও মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনায় মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশজুড়ে প্রতিটি জেলায় প্রদর্শিত হবে গণহত্যা পরিবেশ থিয়েটার। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় দেশের বরেণ্য নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতাদের অংশগ্রহণে বাস্তবায়িত হচ্ছে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ।

গতকাল শুক্রবার রাত ৮ টায় মেহেরপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দেশব্যপী এই নাট্যযজ্ঞের উদ্ভোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও লিয়াকত আলী লাকী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। বিশেষ অতিথি মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউল আলম।

এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম, মেহেরপুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিউল ইসলাম সরদার। মেহেরপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে মঞ্চস্থ হয় নাটক ''বোধন''। মেহেদি তানজিরের রচনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি নাট্যদলের শিল্পীরা নাটকটি পরিবেশন করেন। নাটক সম্পর্কে ভাবনা ও প্রয়োগ প্রতিক্রিয়ায় নাট্যকার ও নির্দেশক মেহেদী তানজির বলেন, "বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অসংখ্য মানুষের রক্তের স্মৃতি বিরাজ করছে।

বলতে গেলে পুরো দেশটাই গণহত্যার স্মৃতি বহন করছে। ঐতিহাসিক মেহেরপুরের ইতিহাস তেমনি গভীর। পাক হানাদারদের জুলুম আর নৃশংস হত্যার স্মৃতি বহন করছে এই অঞ্চলের প্রতিটি ইট, প্রতিটি মানুষের হৃদয়। যদিও হৃদয়ের গভীরে থাকা স্মৃতি আজ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র কথা সর্বস্ব হয়ে আছে। ‘প্রত্যক্ষদর্শী, জুলুমের শিকার, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়ান ও অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা হয়েছে মেহেরপুর সরকারী কলেজের আবহে।

‘বোধন’ ইতিহাসের বয়ানকে অতিক্রম করে অনুধাবনের পর্যায়ে পৌঁছাতে চায়। এই পরিবেশনার অংশ হলো দর্শক, অভিনেতা, নির্দেশক এবং নেপথ্যে কাজ করা প্রত্যেকেই। সংলাপ যেখানে অর্থ হারায় অভিজ্ঞতালব্ধ উপলব্ধি সেখানে ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে। মেহেরপুর সরকারী কলেজের স্মৃতিবিজড়িত পরিবেশ এই পরিবেশ থিয়েটারে মূল উপজীব্য। এই পরিবেশে একজন অংশগ্রহণকারীও যদি অতীত আত্মত্যাগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবন চর্চায় প্রয়োগ ঘটাতে পারে তখনই এই পরিবেশনা স্বার্থক বলে গণ্য হবে। অতীতকে ভুলে ভবিষ্যৎ নির্মিত হতে পারে না।’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও নাট্যজন লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমাদের জন্য এটা একটা সৌভাগ্য। মুজিববর্ষের পরপরই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা সারাদেশে মানুষের কাছে পৌঁছাতে যাচ্ছি বধ্যভূমি পরিবেশ থিয়েটার নিয়ে। শিল্পের সব শাখাই মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কাজ করেছে, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর যে গণহত্যারও পঞ্চাশ বছর তা এই পরিবেশ থিয়েটারের মাধ্যমে দেশব্যাপী তুলে ধরতে চাই। শিল্প-সাহিত্য ইতিহাসকে সজীব রাখে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। সারাদেশে এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গণহত্যা-বধ্যভূমি তথা মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে শৈল্পিকভাবে পৌঁছাতে চাই।’

স্মৃতির গভীরে থাকা রক্তক্ষরণ নতুন প্রজন্মকে যথাযথ ভাবে নাড়া দেয় না বলেই অন্যায়, দূর্নীতি যেনো দৈনন্দিন ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। এই পরিবেশনায় কোনো গবেষকের গবেষণা ফল উপস্থাপন করা মুখ্য নয়। প্রত্যক্ষদর্শী, জুলুমের শিকার, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়ান ও অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা হয়েছে মেহেরপুর সরকারী কলেজের আবহে। ‘বোধন’ ইতিহাসের বয়ানকে অতিক্রম করে অনুধাবনের পর্যায়ে পৌঁছাতে চায়। এই পরিবেশনার অংশ হলো দর্শক, অভিনেতা, নির্দেশক এবং নেপথ্যে কাজ করা প্রত্যেকেই।

সংলাপ যেখানে অর্থ হারায় অভিজ্ঞতালব্ধ উপলব্ধি সেখানে ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে। মেহেরপুর সরকারী কলেজের স্মৃতিবিজড়িত পরিবেশ এই পরিবেশ থিয়েটারে মূল উপজীব্য। এই পরিবেশে একজন অংশগ্রহণকারীও যদি অতীত আত্মত্যাগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবন চর্চায় প্রয়োগ ঘটাতে পারে তখনই এই পরিবেশনা স্বার্থক বলে গণ্য হবে। অতীতকে ভুলে ভবিষ্যৎ নির্মিত হতে পারে না বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও নাট্যজন লিয়াকত আলী বলেন, "আমাদের জন্য এটা একটা সৌভাগ্য।

মুজিব বর্ষের পরপরই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা সারাদেশে মানুষের কাছে পৌঁছাতে যাচ্ছি বধ্যভূমি পরিবেশ থিয়েটার নিয়ে। শিল্পের সব শাখাই মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কাজ করেছে, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর যে গণহত্যারও পঞ্চাশ বছর তা এই পরিবেশ থিয়েটারের মাধ্যমে দেশব্যাপী তুলে ধরতে চাই। শিল্প-সাহিত্য ইতিহাসকে সজীব রাখে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। সারাদেশে এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গণহত্যা-বধ্যভূমি তথা মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে শৈল্পিকভাবে পৌঁছাতে চাই।

নাটক শেষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেন, এই মেহেরপুরের বধ্যভূমিতে আমরা যাতে সেই রক্তের শপথ নিয়েই আমি যেন দেশ গড়ার জন্য দেশের জন্য আমাদের সেই অনুভূতিটা যে আমরা কাজ করব কারণ তারা আমাদের জন্যই এই দেশটাকে স্বাধীন করে রেখে গেছেন। তারা নিজেদের জীবন দিয়েছেন আজকে আমাদের সেই উপলদ্ধি যে আমাদের সেই পূর্বপুরুষ যারা আমাদের এই দেশটিকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন আজকে তাদের আর্তনা তাদের কষ্ট তাদের যন্ত্রণা তাদের সেই মহান ত্যাগ সেটি আজকে আমরা উপলব্ধি করেছি এই নাটকের মধ্য দিয়ে।

(এস/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০২১)