রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি :
মানবদেহের ক্ষতি জেনেও ঈদ সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কোরবানির জন্য কয়েক হাজার গরুকে ভারতীয় নিষিদ্ধ পাম্প ট্যাবলেট খাইয়ে দ্রুত মোটাতাজা করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগের ফলে মোটাতাজা হওয়া এসব পশুর গোশত খেলে মানুষের জন্যও ক্ষতিকর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। স্থানীয় হাতুড়ে চিকিৎসক ও ভারতীয় নিষিদ্ধ নিম্নমানের ওষুধ কোস্পানির প্রতিনিধির পরামর্শে জেলার প্রায় সকল এলাকায় এ বিষয়ে তত্পরতা চলছে।

জানা গেছে, খামার মালিকরা কোরবানির বাজার ধরতে বছরের রোজার ঈদের পরই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভারতীয় নিষিদ্ধ পাম্প ট্যাবলেট খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেন। স্থানীয় বেশ কিছু ওষুধের দোকানে ভারতীয় নিষিদ্ধ নিম্নমানের এ ট্যাবলেটের রমরমা ব্যবসা চলছে। যেসব পশুকে ওই ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়, সেসব পশুর মাংস খেলে মানবদেহে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে ডাক্তাররা জানান। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এবার রায়পুরে কোরবানির বাজার ধরতে প্রায় ১০ হাজার গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।

রায়পুর পৌর শহরের গরু ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে সবখামারির মাঝে চলছে গরু মোটাতাজা করার প্রতিযোগিতা। গরুর খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা এদিকে বেশি ঝুঁকছেন। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি সংখ্যক গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে।
খামারি মান্নান জানান, ঈদ সামনে রেখে তিনি ৭টি গরু মোটাতাজা করেছেন। একেকটি গরুর জন্য প্রতিদিন ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ২০০ টাকা। তার খামারে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকায় কেনা গরুকে তিনি ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রির আশা করছেন। চন্ডিপুর ইউনিয়নের খামারি মোস্তফা মিয়াও একই কথা বলেন।

রায়পুরের গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার জানান, নিষিদ্ধ ট্যাবলেট খাইয়ে গরু মোটাতাজা করার কাজ অনেক বেড়ে গেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ উপজেলায় গরু মোটাতাজাকরণ বেশ জনপ্রিয়। গরুর আকার ও ওজন বাড়িয়ে উচ্চমূল্য পাওয়ার আশায় খামারিরা বিভিন্ন ট্যাবলেট ও পাউডার খাওয়ান। প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে এসব ওষুধের চাহিদা বেড়ে যায়।
উপজেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ডাঃ মোঃ আবদুল মোতালেব জানান, সাধারণত গরুকে মোটাতাজা করতে ভিটামিন জাতীয় ওষুধ ও খাদ্যের পরিমাণ বাড়ানো হয়। তবে অনেক ব্যবসায়ী ও খামারি খরচ কমানোর জন্য নিষিদ্ধ ওষুধ খাইয়ে পশু মোটাতাজা করে থাকেন।

(এমআর/এনডি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৪)