আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : মৃত্যুর পরেও স্বামীর বাড়িতে কবরের জায়গাটুকু না হওয়ায় স্থানীয় মানব দরদী এক ব্যক্তির জায়গায় স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে অবশেষে শনিবার রাতে দাফন করা হয়েছে পানিতে ডুবে মৃত্যু বরণ করা নওমুসলিম এক গৃহবধূ স্বপ্না বেগমকে। স্বপ্নার শিশু কন্যা বর্তমানে তার বাবার বাড়িতে রয়েছে। 

উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের বাকাল ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর ও ব্যবসায়ি আসাদ খলিফার সন্মতিতে তার মালিকানাধীন ফুল্লশ্রী গ্রামের জায়গায় আগৈলঝাড়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ং স্টার ক্লাবের সদস্যদের উদ্যোগে শনিবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে নও মুসলিম গৃহবধু স্বপ্না বেগমের লাশ।

এর আগে শুক্রবার সকালে ভাড়া বাড়ির পুকুরে কাজ করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায় এক সন্তানের জননী স্বপ্না বেগম (৩০)। স্থানীয়রা সাড়ে সাতটার দিকে স্বপ্নার লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।

থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, উপজেলার আস্কর গ্রামের সুভাষ বিশ্বাসের মেয়ে স্বপ্না পরিবারের অমতে গত ৭/৮বছর আগে স্বপ্না নিজের ইচ্ছায় ধর্ম ত্যাগ করে গৌরনদী উপজেলার শরিকল গ্রামের শাহজিরা গ্রামের রিপন বেপারীকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে বাবার পরিবারের সাথে তাদের কোন যোগাযোগ ছিল না। আগৈলঝাড়া থানা সংলগ্ন কুয়াতিয়ারপাড় গ্রামের শাহ আলম হাওলাদারের ভাড়া বাসায় সন্তান নিয়ে বসবাস করত স্বপ্না বেগম (৩০)। স্বামীও তেমন খোজ খবর নিত না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছে স্বপ্নার মৃগী রোগ ছিল।

স্বপ্নার মৃত্যুর পরে তার স্বামী রিপন বেপারীর সাথে পুলিশ ফোনে কথা বললেও পরে ওই নম্বরটি বন্ধ করে রাখে রিপন। স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ শুনেও ঘটনাস্থলে আসেনি স্বামী রিপন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রিপনের একাধিক বিয়ে রয়েছে। বিয়ের পর কয়েক বছর সংসার করলেও তার পরে তাদের আর কোন খোঁজ খবর নিত না রিপন।

অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলী হোসেন জানান, স্বপ্নার মৃত্যুর পরে তার লাশ গ্রহন ও দাফনের জন্য বাবা বা স্বামীর পরিবারের কোন লোক পাওয়া যাচ্ছিলা না। মর্গ থেকে লাশ আসার পরে অবশেষে বাকাল ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর আসাদ খলিফা তার মালিকানাধীন জায়গায় কবর দেয়ার অনুমতি দেয়ায় আগৈলঝাড়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ং স্টার ক্লাবের সদস্যরা শনিবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে নও মুসলিম গৃহবধু স্বপ্না বেগমের লাশ দাফন সম্পন্ন করেছে।

আগৈলঝাড়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ং স্টার ক্লাবের সভাপতি খায়রুল বাশার বাপ্পি জানান- আসাদ খলিফা স্বপ্নাকে তার জায়গায় কবরের জায়গা দেয়ার সম্মতি দেয়ার পরে স্বপ্নার লাশ দাফনের লোক না পাওয়ায় তার সংগঠনের সদস্যরা উদ্যোগেী হয়ে স্থানীয় মহিলাদের মাধ্যমে গোসল ও ধর্মীয় রীতি-নীতি যথাযথ অনুসরন করে জানাজা শেষে স্বপ্নার লাশ দাফন করেছে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০২১)