মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সিঁড়িতে সুমাইয়া আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় তার কথিত প্রেমিক মনির হোসেনকেও কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে আহত করে দুর্বৃত্তরা।

আশঙ্কাজনক অবস্থায়মনির হোসেনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর (রেফার্ড) করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে পুলিশ স্কুলছাত্রী সুমাইয়ার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার (১৬) কালিহাতী উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌস রহমানের মেয়ে ও এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা এলেঙ্গা পৌরসভার মসিন্দা এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবারসহ বসবাস করতেন। গুরুতর আহত মনির হোসেন(১৭) এলেঙ্গা পৌরসভার মশাজান এলাকার মেহের আলীর ছেলে। তিনি ট্রাক চালকের সহকারী ছিলেন।

স্থানীয়রা জানায়, স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তারের সাথে কিশোর মনির হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি সুমাইয়ার পরিবার মেনে নিতে পারছিল না।

নিহত সুমাইয়ার বাবা ফেরদৌস রহমান জানান, বুধবার সকাল ৬টার দিকে তার মেয়ে স্থানীয় প্রাইম অ্যাকাডেমি নামক কোচিং সেণ্টারে প্রাইভেট পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পান তার মেয়েকে কে বা কারা গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে। তবে ঘটনাস্থলে আহতাবস্থায় পড়ে থাকা ছেলেটিকে তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।

গুরুতর আহত মনির হোসেনের খালা রোজিনা বেগম জানান, মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) রাতের খাবার খেয়ে মনির বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজনদের কাছে খবর পেয়ে মনিরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তারা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল করিম জানান, নিহত সুমাইয়া আক্তার তাদের বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রকৃত অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও ওই হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাজিব পাল চৌধুরী জানান, মনিরের পেট থেকে ভুরি বেড়িয়ে পড়েছে। তার গলায় ও ঘাড়ে কাটা চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত আছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে- যতটা সম্ভব চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর (রেফার্ড) করা হয়েছে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে এলেঙ্গা শামসুল হক কলেজের সামনে থেকে গলাকাটা এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় সেখানে আহতাবস্থায় পড়ে থাকা এক কিশোরকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আহত ওই কিশোরের ঘাড়সহ বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রেমঘটিত কোনো কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

(এসএম/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০২১)