রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রাম গড়াই নদীর জেগে উঠা চরের ৯.৪২ একর জমি বন্দোবস্ত পেলেও ভোগদখল করতে পারছে না ১৯টি ভূমিহীন পরিবার। রাতে ও দিনে এলাকার প্রভাবশালী চক্র জমি দখল করে চাষাবাদ শুরু করেছে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গড়াই নদীর জেগে উঠা ১৮.৮৪ একর জমির মধ্যে ৯.৪২ একর জমি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামের ফতেহ আহম্মেদ, রাজ্জাক শেখ, সিরাজুল ইসলাম, শাহিন বিশ্বাস, রব মোল্যা, মসিয়াল মন্ডল, আতিয়ার মন্ডল, মকলেছ মন্ডল, হবিবর মন্ডল, মালেক মন্ডল, আজিম, ইসহাক মন্ডল, হাদি মহাজন, আজিজ মহাজন, সিদ্দিক মন্ডল, কালাম মহাজন, হবিবর মন্ডল, ইলাহী মন্ডল, রফিক মোল্যা ও তাদের স্ত্রীদের নামে ৩৮জনকে ভূমিহীন হিসেবে দলিলমূলে ২০১০ সালে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। ওই জমিতে কয়েকজন ভূমিহীন বসতবাড়ী উত্তোলন করে বসবাস করাসহ চাষাবাদ করে আসছিল।

বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হলেও ভূমিহীনদের পক্ষে রায় হয়। তারপরও গত বছর ২০২০ সালে এ মৌসুমে জমির দখলকে কেন্দ্র করে দু,টি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়াতে বালিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা, বালিয়াকান্দি থানার ওসি তারিকুজ্জামান, নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে চাষাবাদ বন্ধ রাখাসহ সুরহার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরপরও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েকদফা হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘদিনেও বিষয়টি সুরহা না হওয়ায় এখন চাষাবাদের মৌসুম শুরু হওয়ার কারণে আবারও জমির দখলকে কেন্দ্র করে দু,টি গ্রুপ যে কোন সময় মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ফতেহ আহম্মেদ, আজিজ মহাজনসহ বেশ কয়েকজন ভূমিহীন দলিল গ্রহিতা অভিযোগ করে বলেন, সরকার আমাদেরকে দলিলের মাধ্যমে বন্দোবস্ত প্রদান করেছেন। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদেরকে চাষাবাদ করতে নিশেধ করায় আমরা জমি ফেলে রেখেছি। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এলাকার প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্র রাতের অন্ধকারে ও দিনের বেলায় জমি চাষ করে দখলে নিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। দখলদারদের বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষ হবে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা বন্দোবস্ত পেলেও বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ হাসিবুল হাসান বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের সাথে কথা বলেই সুরহার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

(একে/এসপি/অক্টোবর ৩০, ২০২১)