জে জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

এলাকার সাধারণ মানুষের ধারণা, একজন চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে হামলা করার পর মামলায় আসামি হয়েও অপরাধারীরা স্যোশাল মিডিয়া খ্যাত ফেসবুকে নানা উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। অথচ পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না। তবে বড়উঠান ইউনিয়নের স্থানীয় জনতা বিচার দাবি করে ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলমের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে পিএবি সড়কে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্ষুব্ধ জনতারা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। তাতে চেয়ারম্যানের পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের উপর সন্ত্রাসী হামলা করা হলো অথচ এখনো পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারল না।

ঘটনার ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও সন্দেহজনক কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনও মনে করেনি পুলিশ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীরা এ ব্যাপারে পুলিশের গাফিলতি আছে বলেও মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে বড়উঠান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মন্নান খান বলেন, ‘মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় একজন চেয়ারম্যানের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হলো। এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। কারা হামলা করেছে তা মামলায় স্পষ্ট। অথচ ঘটনার ১৯ দিন পরও কেউ গ্রেপ্তার হলো না। এটা বড়উঠান তথা কর্ণফুলীবাসীর জন্য লজ্জার।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেন আসামিদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তা সাধারণ মানুষ ভালো জানে। তবে এ ঘটনার বিচার চেয়ে প্রয়োজনে সাধারণ মানুষেরা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন তদন্তকাজে পুলিশের গাফিলতির কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালিয়েছি।’

মামলার অগ্রগতি ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জানতে চাইলে বাদি মোঃ শহিদ উল্লাহ্ বলেন, ‘প্রথম কয়েকদিন পুলিশের বেশ আন্তরিকতা ছিল-এখন কার্যত কোন ধরনের ভূমিকা চোখে পড়ছেনা।’

এ বিষয়ে জানতে কর্ণফুলী থানার ওসি মোঃ দুলাল মাহমদু এর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ১৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহমীরপুর বাদামতল এলাকায় বড়উঠানের চেয়ারম্যানের হামলা হয়। এতে চেয়ারম্যানসহ তার দুই অনুসারী উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা (আইসিটি) মোহাম্মদ ফারুক আহত হন।

১৭ অক্টোবর রাতে আহত মো. শহীদুল্লাহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে কর্ণফুলী থানায় মামলা (নং-২৯) দায়ের করেন। মামলায় আসামিরা হলেন-ইলিয়াছ সাদ্দাম (২৯), মোঃ জামাল (২৮), মোঃ কপিল উদ্দিন (২৭), আবদুর রহমান (৩১), মোঃ ফিরোজ (২৮), মোঃ আজিজ প্রকাশ লেঙ্গা আজিজ (৩২), মোঃ নাঈম উদ্দিন (২৮), মোঃ সেলিম (৩৩), মোঃ দিদারুল ইসলাম দিদার (২৮), মোঃ ইলিয়াছ প্রকাশ কালু (২৮), মোঃ রোকন (২৮), সালা উদ্দিন (২২), মোঃ রিফাত (২৬) ও মোঃ রুবেল (৩০)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ জন।

(জেজে/এসপি/নভেম্বর ০১, ২০২১)