রণেশ মৈত্র


আগেই বলেছি, ৭ নভেম্বর মহামতি লেনিনের নেতৃত্বে একটি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে বিস্ময়কর সাফল্যের সাথে রুশ দেশে অত্যাচারী জারদের শাসন থেকে উচ্ছেদ করে। সেই বিপ্লবের ঢেউ লেগেছিল বুলগেরিয়া, পোল্যা-, জার্মানী, চেকোশ্লোভাকিয়া, রুমানিয়া সহ ডজন খানেক ইউরোপীয় দেশে রাশিয়ান কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বে।

রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয় ১৯১৭ সালে কিন্তু সেই সেই বিপ্লবের প্রবল উত্তাল ঢেউ চীন, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া প্রভৃতি দেশে। এই দেশগুলিও নিজ নিজ পন্থায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সমাধা করে নিজ নিজ দেশের সম্পদ জনগণের হাতে তুলে দিয়ে বন্টন ও মালিকানা। জনগণের কাছেই দিয়ে দিয়েছিল। ফলে সর্বত্র মানুষ সফল শোষণ মুক্ত এক নতুন জীবনের সন্ধান পেয়েছিল ঐ সব দেশগুলিতে। মার্কস, এঙ্গেল্স্ লেনিন, স্তালিন, মাওসেতু, হোচিটিন হয়ে পড়েন যুগশ্রষ্ঠা নতুন আলোর দিশারী।

পরবর্তীতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের তীব্র বিরোধিতার মুখে মার্কিন মুলুকের অতিশয় নিকটবর্তী দেশে ফিদেরল ক্যাষ্ট্রোর কিউবাতেও বিস্ময়করভাবে সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক বিনির্মান এক দীর্ঘকালীন ব্যাপার। সমাজতান্ত্রিক স্তর অতিক্রম করে উন্নত সমাজতান্ত্রিক স্তরে পৌঁছাতে সোভিয়েত কমিউনিষ্ট পার্টির সময় লেগেছিল ৭০ বছরেরও বেশী। ঐ পার্টিকে প্রতি বিপ্লব মোকাবিলা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়েছিল এবং তা সম্ভব হয়েছিল পার্টি ও নেতৃত্বের তুমুল জনপ্রিয়তা এবং শক্তিশারী পার্টি সংগঠনের কল্যাণে। দেশটিকে প্রথম থেকেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক নম্বর শত্রু বলে পরিচিত হতে হয়েছিল।

কোন কারণ ছিল না এই শত্রুযতার একটিমাত্র কারণ ছাড়া। সে কারণটি হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন তার দেশেই শুধুমাত্র পুঁজিবাদ ও তার নির্মম শোষণের অবসান ঘটায় নি। তারা ইউরোপের আরও ডজন খঅনেক দেশ ও এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার কতিপয় দেশথেকেও পুঁজিবাদকে উৎখাত করে সমাজতন্ত্রের পতাকা উড়িয়েছে।

আরও কারণ হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন অল্পকালের মধ্যেই আন্তর্জাতিক ভিত্তিতে আমেরিকার এক শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছিল-যেমনটি আজকের চীন হয়ে দাঁড়িয়েছে তার শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে নেওয়ার ফলে।

জাতিগত শোষণ নিপীড়ন, জাতীয় স্বাধীনতার সংগ্রাম ও বিশ্ব শান্তি প্রতিদষ্ঠার সংগ্রামেও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিশ্বের এক নম্বর শত্রুতে পরিণত হয়। সোভিয়েত দেশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল একটি রফতানীকারক দেশে-বিশ্বের গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের এক অকৃত্রিম সক্রিয় বন্ধুতে। তার প্রত্যক্ষ রূপ দাঁড়িয়েছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তৃতীয় বিশ্বের নানা বিধ আন্দোলনে যেমন আগ্রো এশিয় গণ সংহতি আন্দোলন, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন প্রভৃতি।

এই জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওয়াহের লাল নেহেরু ও পরবর্তীতে মিসেস ইন্দিরা গান্ধী ইন্দোনেশিয়ার কর্ণেল সুয়েকার্নো, মিশরের কর্ণেল নামের ও অপর কতিপয় প্রগতিশীল দেশের ক্ষমতাহীন রাষ্ট্রনায়কের মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানও জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে দেশকে সম্পৃক্ত করেছিলেন ।

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনভূক্ত দেশগুলির বেশীর ভাগ কল-কারখানা এবং বৃহৎ শিল্প কারখানা জাতীয় করণ করেন যদিও তাঁরা তারা বন্টন ব্যবস্থা জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে চান নি। ফলে সমাজতন্ত্রমুখীন হলেও দেশগুলি সমাজতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয় নি। তবে বিশ্বব্যাপী যুবসমাজের মধ্যে সমাজতন্ত্রের প্রতি তীব্র আকর্ষণ সৃষ্টি হয়-বহু দেশে কমিউনিষ্ট পার্টি বা সমমনা নানা নামের প্রগতিশীল পার্টি শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে গোটা পৃথিবীর যুব সমাজ মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের তীব্র বিরোধী এবং সমাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী ছাত্র ও যুব আন্দোলন প্রবল শক্তি অর্জন করে যাতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। তাই তারা ষড়যন্ত্র আঁটতে থাকে-নানা দেশ থেকে সমাজতন্ত্রের উচ্ছেদ সাধনের প্রচেষ্টায় সি.আই.এ. থেকে শুরু করে নানা বন্ধু দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির নেতাদের হত্রা করানোর চেষ্টা করে। আবার বিরোধীদল গড়ে তুলে একই কাজ করানোর জন্য তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারও খরচ করে। একমাত্র কিউবাকে হত্রা করানোর জন্যই মার্কিন শাসক গোষ্ঠী অন্তত: ৫০ বার সি.আই-এর মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালায়।

শুধুই বা কমিউনিষ্ট রাষ্ট্রগুলির প্রধান কেস, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র বিরোধিকারী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকেও তাদের গোপান সংস্থা ও এ দেশীয় সহযোগিতাদের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ভোররাতে ঘুমন্ত ঢাকায় তাঁর ৩২ নং ধানন্ডিস্থ দ্বিতল বাসগৃহে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। ইন্দোনেশিয়ার শোয়েকার্নোকেও সরিয়ে তাদের এক দালানকে (ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনীর এক জুনিয়ার কর্মকর্তাকে ক্ষমতায় আসীন করে শুধুমাত্র একটি অপরাধে। শোয়েকার্নো, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম নেতা সে দেশের বৃহত্তম কমিউনিষ্ট পার্টির সহযোগিতা নিয়ে দেশ চালাচ্ছিলেন। নিষ্ঠুর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ইন্দোনেশিয়ার নতুন দালালকে ক্ষমতায় বসিয়ে তার মারফতে লক্ষ লক্ষ কমিউনিষ্টকে হত্যা করে নগ্ন উল্লাসে মেতে পড়ে।

ভারতের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম নেত্রীর নিষ্ঠুর হত্যালীলার পিছনেও আমেরিকার গোপন হাত নিয়োজিত ছিল বলে সবার বিশ্বাস।

বিশ্বব্যাপী কমিউনিষ্ট দেশগুলিতেই শুধু নয় ইরানের প্রগতি মুখী রাজকীয় শাসন উৎখাতের জন্যে তথাকথিত ইসলামী বিপ্লব ঘটিয়ে খামেনীর শাসনের মাধ্যমে ইরানের বিশাল তুদেহ পার্টির হাজার হাজার নেতা, কর্মী, সদস্য ও সমর্থককে নিষ্ঠুরতম কায়দায় হত্যা করে । অথচ ঐ ইসলামী বিপ্লবের নেতা খামেতীকে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তুদেহ পার্টি (ইরানের কমিউনিষ্ট পার্টির তৎকালীন নাম) ঐ বিপ্লবকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিয়ে বিপ্লবকে সাফল্যমাণ্ডিত করতে ব্যাপক সহযোগিতা করেছিল। আজ সেই ইরান মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বলে জাহির করে সৌদি আরবের সাথে তাদের কোন্দলের কারণে। ইরান আজ বিশ্বব্যাপী প্রগতিশীল বিশ্ব আন্দোলনের চূড়ান্ত বিরোধী গণতন্ত্রেরও।

এই আমেরিকায় বছর দেড়েক আগে ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদের পরিবর্তন ঘটায় অনেকের মনে ধারণার সৃষ্টি হয়েছে, তিনি হয়তো বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবেন। কিন্তু সে ধারণা যে ঠিক নয়-তা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত। বাইডেন ও অতীতের শাসকদের মত বিশ্ব পুঁজিবাদের শুধু সমর্থকই নন, তার রক্ষক এবং পাহারাদারও বটে। ইদানীংকালের আফগানিস্তান (এবং বিগত ২০ বছরের শাসন) এ ব্যাপারে সকলের চোখ খুলে দিয়েছে। ২০ বছরে সেখানে বহু মার্কিন সৈন্য নিহত হয়েছে এবং ঐ নিহত সৈনিকদের পরিবার পরিজনের অব্যাহত দাবীর ফলেই বাইডেন সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সৈন্য প্রত্রাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে।

সমাজতন্ত্র, আগেই বলেছি, জ্ঞান, বিজ্ঞান, সমাজ উন্নয়নে যে কতটা সফল-কতটা দারিদ্র্য দূরীকরণ, বেকারত্বের অবসান প্রভৃতিতে, এবং দেশটাকে ও বিশ্বকে স্বনির্ভর করতে কতটা আন্তরিক ছিল-তা অতীতে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই দেখা গেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন সমুদ্রে পুঁতে রাখা আমেরিকার মাইন অপসারণ করে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরে জাহাজ চালাচলে নিরাপত্তা বিধান, কৃষি যন্ত্রপাতি রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে রফতানি না করে বরং বাংলাদেশে ট্রাক্টর সহ সকল প্রকার আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরীর কারখানা বাংলাদেশেই স্থাপনের পরামর্শ প্রদান এবং সেক্ষেত্রে রাশিয়া সার্বিক সহযোগিতা দানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বল্পতম সময়ে কৃষিতে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ উৎপাদনশীল দেশে পরিণত হতে পারে প্রভৃতি । ১৫ আগষ্ট বাংলাদেশে প্রতিবিপ্লব ঘটে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয় নি। এখন আমরা বিশ্ব পুঁজিবাদের অংশীভূত। তাই কোটি টাকার কোটি কোটি মালিক গজাচ্ছে, ব্যাংকগুলি থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে এবং দুর্নীতির অবাধ বাজারে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে।

উন্নয়ন ঘটছে চোখ বাঁধানো উন্নয়ন, আকাশ ছোঁয়া বহুতল-বিশিষ্ট দালান-কোঠা, চোখ-বাঁধানো বাজার বিপণী, পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমানুবিক কেন্দ্র প্রভৃতি। নিঃসন্দেহে এই সকল উন্নয়ন প্রশংসাই।

কিন্তু একই সাথে ভাবাযাক এ সকল উন্নয়নে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা-দেশী বিদেশী তহবিলে যেমন নির্মিত হচ্ছে-তেমনই আবার বস্তির সংখ্যা, বেকারের সংখ্যা, আইন শৃংখলার অবনতির পরিমাণ বা সংখ্যা এবং নারী নির্য্যাতন, নিপীড়ন, যৌন নির্য্যাতনের সংখ্যাও প্রতিদিন বাড়ছে বাড়ছে বিচারহীনতাও।

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সর্বাধিক ক্ষতি করেছে গোটা বিশ্বের বিগত শ তাব্দীর শেষ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটিয়ে। বিশ্বের সেরা বিপ্লবী লেনিনের যাবতীয় মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা হয়, ব্যক্তি মালিকানা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে সে দেশে পুঁজিবাদের পুনরুজ্জীবন ঘটানো হয়। আবার শোষন নির্য্যাতন ও ত্রাসের রাজত্ব ফিরিয়ে আনা হয়। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে কঠিন ধলণের একনায়কতন্ত্র নজির বিহীনভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়,-দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে, বেকারত্ব সৃষ্টি হয়, নারীর মর্য্যাদা হানি হয়, অসংখ্য ধনীর সৃষ্টির মাধ্যমে বৈষম্য বৃদ্ধি করা হয়...ইত্যাদি।

সমাজতন্ত্রের বৃহত্তম রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নেই শুধু এমন বিপর্য্যয়ের সৃষ্টি হয় নি-এই বিশ্বাসের শিকারে পরিণত হয়েছে অপরাপর ইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি।

কিন্তু নিপীড়িত মানুষ তো কোথাও নিপীড়নের সাথে আপোষ করে না-তাকে মেনেও নেয় না। এটাই দীর্ঘকালব্যাপী অর্জিত মানুষের অভিজ্ঞতা। তবে সময় লাগে-রাতারাতি কোথাও ভাল ও দীর্ঘস্থায়ী কোন কিছু ঘটে না। এক্ষেত্রেও সময় লাগবে। ইতোমধ্যেই ঐসব দিনগুলিতে কমিউনিষ্ট পার্টি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবী নিয়ে গড়ে উঠেছে-উঠতে শুরু করেছে-কোন সাবেক সমাজতন্ত্রী দেশে জনাকয়েক করে পার্লামেন্ট সদস্যও নির্বাচিত হচ্ছেন। নতুন নতুন কিছু ছোট ছোট দেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বামপনথীরা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করছেন বলেও আন্তর্জাতিক গণ মাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

যে দেশগুলিতে অতীতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেগুলির ইউরোপীয় দেশগুলিতে সমাজতন্ত্রের বিপর্য্যয় ঘটার পরেও যে দেশগুলি সমাজতন্ত্রকে সফল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নস্যাৎ করে দিয়ে রক্ষা করেছিল সেই দেশগুলি ক্রমোন্নীতি সাধন করে চলেছে এবং নিকটবর্তী এলাকাগুলির যুব সমাজকে সমাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে চলেছে।

শুধুই সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় দেশগুলিতে সমাজতন্ত্রের বিপর্য্যয় ঘটে নি। সমাজতন্ত্র প্রয়োগেও কিছু কিছু ভ’র ত্রুটির ফলেই এমন বিপর্য্যয় ঘটতে পেরেছে। যেমন দীর্ঘকালের সমাজতান্ত্রিক শাসনে এক শক্তিশালী আমলাতন্ত্র ও দলীয় করণ গড়ে উঠেছিল এবং তাদেরই সহযোগিতায় রাশিয়ায় বিপর্য্যয় ঘটে। স্বয়ং পুতিন তার জীবন্ত প্রমাণ।

যেন বাংলাদেশের মুশতাক-তবে পুতিন কাউকে খুন করেন নি। যা হোক সূর্য্যােদয়ের সম্বাবনা আকাশ ভরা। শোষণ বাড়ছে তাই শোষণ বিরোধী মনোভাবও বাড়ছে বাংলাদেশে। তরুণদের সামনে বর্তমানে জরুরী কাজ হলো সমাজতন্ত্রকে বুঝানো। হোক না তা গণতান্ত্রিক পথে। অতীতের মডেল অবশ্যই তা পাল্টাতে হবে। নতুন কোন মডেল ও সামনে নেই। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন মডেলও হতে পারে। আমাদের তরুণেরাও পড়বে, জানবে, নতুন মডেল গড়ে সমাজতন্ত্রের পতাকা বাংলাদেশে ওড়াবেই।

লেখক : সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক।